ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘দাদা’ প্রণব ও ‘বোন’ মমতার জন্য নিজের হাতেই রান্না করলেন বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাও আবার মজার ভাপা ইলিশ।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বড়ভাইয়ের মতোই শ্রদ্ধা করেন শেখ হাসিনা। প্রণবের বাঙালি স্ত্রীর সঙ্গেও তার মধুর সম্পর্ক ছিল।
জানা যায়, এবারের ভারত সফরে ‘দাদার’ রাষ্ট্রপতি ভবনেই অতিথি হিসেবে উঠেছেন হাসিনা। সেখানেই নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন তিনি।
‘দাদার’ বাসভবনে উঠেছেন, তাই তাকে রান্না করে খাওয়ানোর সাধ হলো ‘বোন’ শেখ হাসিনার। সেজন্য ঢাকা থেকে নিয়ে গেছেন ছয়জন পাকা রাঁধুনি। তারা রেঁধেছেন ইলিশের তিন রকমের পদ। ভাপা ইলিশ রান্নায় নিজেই হাত লাগান হাসিনা। ‘প্রণবদা’ যে খেতে বড় ভালবাসেন।
অবশ্য ‘দাদাকে’ খাওয়াতে পারলেও ‘বোন’ মমতার ইলিশ খাওয়া হয়ে ওঠেনি। তিস্তার জল নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে মুড়ি-বাতাসা খেয়েই বিদায় নেন তিনি।
দিল্লি সফরে যাওয়ার সময় পদ্মার ইলিশ নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিল মমতার জন্য জামদানি শাড়ি ও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্য ঢাকাই মসলিনের পাঞ্জাবি। সন্ধ্যায় দুজনের হাতেই উপহার তুলে দেন হাসিনা। মমতাও হাসিনার হাতে তুলে দেন রাধারমণ মল্লিকের মিষ্টি ও শাল।
কী উপহার পেলেন এ প্রশ্নে রহস্য রেখে মমতা জবাব দেন, “গিফটের কথা কেউ বলে নাকি?”
প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে দেয়া মধ্যাহ্নভোজেও ছিল হরেক পদ। লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, পাবদা, ভেটকি, গলদা চিংড়ির মালাইকারি, মুরগির মাংস, মিষ্টি দই এবং রসগোল্লা। আর ছিল বাংলার প্রসিদ্ধ গন্ধরাজ লেবু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানতেন গন্ধরাজ লেবু হাসিনার খুব প্রিয়। লাঞ্চে একই টেবিলে মোদী, হাসিনা, মমতা। সঙ্গে সুষমা স্বরাজ।
একটু দূরে অন্য একটি টেবিলে তৃণমূল সংসদ সদস্য সুগত বসু, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং বিজেপি সংসদ সদস্য রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সাদরে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে মমতাকে হাসিনার সঙ্গে একই টেবিলে বসান। হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সঙ্গে সুগত বসুর বাবা শিশির বসুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্র ধরে সুগতর মা সাবেক সংসদ কৃষ্ণা সদস্য বসুর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান শেখ হাসিনা। পদ্মানদীর মাঝির ‘কপিলা’ রুপার সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন তিনি।