ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক ভারত সফরকে ফলপ্রসূ দাবি করে বলেছেন, খালি হাতে ফিরিনি। এই সফরের অর্জন নিয়ে আমি তৃপ্ত। তিস্তা চুক্তি দীর্ঘসূত্রতায় পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, কেউ পানি আটকে রাখতে পারবে না। পানি এমনিতে আসবে। তবে নদীগুলোকে ড্রেজিং করতে হবে যাতে পানি ধরে রাখা যায়।
আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে বিএনপি নেত্রীর এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের ভোটেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে চায়।
প্রতিরক্ষা বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সমঝোতার লক্ষ্য সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি উল্লেখ করে হাসিনা জানিয়েছেন, আরও অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। চার দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফেরার পরের দিন সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। লিখিত বক্তব্যে তিনি ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রশ্নোত্তরে তিনি চলমান নানা ইস্যুতে কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসিনা দেশ বেচে না, দেশ রক্ষা করে, স্বার্থ রক্ষা করে’। আমি ভারতের কাছে কোনো দেনা-পাওনার জন্য যাইনি, স্রেফ বন্ধুত্ব চাইতে গিয়েছিলাম, বন্ধুত্ব পেয়েছি। দেশের মানুষের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পেরেছি- এটাই ভারত সফরের সবচেয়ে বড় অর্জন।
হাসিনা বলেন, এ সফর ফলপ্রসূ হয়েছে এবং সফর নিয়ে আমি সম্পূর্ণ তৃপ্ত। এ সফরে ভারত বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে সমান মর্যাদা দিয়েছে।
তিস্তা চুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাটির দেশ হিসেবে পানি এমনিতে আসবে। কেউ পানি আটকে রাখতে পারবে না। তিস্তার গজলডোবায় ভারত যে বাঁধ দিয়েছে, তা দেয়ার সময় যারা ক্ষমতায় ছিল তারা তো কিছু বলেননি। কোনো সরকার এ নিয়ে কথা বলেনি। টুঁ শব্দও করেনি। তখন নদীর ওপর ব্যারাজ তৈরি করা হলো। এটা কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল? এর ফলাফলটা আমরা এখন ভোগ করছি।
তিনি বলেন, এ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক। তবে একটু দীর্ঘসূত্রতা হতে পারে। নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট করেই বলেছেন, আমি এবং তিনি ক্ষমতায় থাকতেই এ সমস্যার সমাধান হবে। এখন একটু অপেক্ষা করে দেখি। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধংদেহি মনোভাব নিয়ে থাকাটা সমীচীন নয়।
তিনি বলেন, এখন আমাদের নদীগুলো ড্রেজিং করতে হবে যাতে পানি ধরে রাখতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সফরে ঠাট্টা করে বলেছি, পানি চেয়েছিলাম, বিদ্যুৎ পেয়েছি। খালি হাতে ফিরিনি। কিছু তো পেয়েছি। আমি মমতাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। আমি বলেছি, অন্যান্য ৫টি ছোট নদী থেকে যেন তিস্তায় পানি আনা হয়। সেখান থেকে যেন আমাদের পানি দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন।
সফরে করা চুক্তি-সমঝোতায় শেখ হাসিনা ভারতের কাছে দেশকে বিক্রি করে দিয়েছেন, রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলের এমন সমালোচনার প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা কখনও দেশ বিক্রি করবে না, দেশকে রক্ষা করবে। যারা এ ধরনের কথা বলেন, তারা বলবেনই, তাদের চরিত্র আমার জানা আছে।
ভারতের সঙ্গে সামরিক সমঝোতা স্মারক প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন, ভারত যে সহায়তা দিচ্ছে তা মাত্র ১ ভাগ সুদে ২০ বছরে পরিশোধযোগ্য নমনীয় ঋণ। এ অর্থ দিয়ে কী করা হবে সে স্বাধীনতা পুরোপুরি বাংলাদেশের। যেকোনো দেশ থেকে সামরিক অস্ত্র সরঞ্জাম বাংলাদেশ কিনতে পারবে। এছাড়া এ চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতার বিনিময় হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সশস্ত্রবাহিনী অত্যন্ত দক্ষ। তবে জ্ঞানার্জন ও প্রশিক্ষণের কোনো শেষ নেই। তাই প্রশিক্ষণ নেয়া হবে। সফর বিনিময় হবে, ইত্যাদি।
তিনি বলেন, আগেই জানতাম এমন একটি প্রশ্ন আসবে তাই এ চুক্তির বিস্তারিত নিয়ে এসেছি। এখানে সবই রয়েছে। চুক্তি নিয়ে লুকোচুরির কিছু নেই। আমার ওপর আস্থা রাখুন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে সহায়তা করেছে, ভারতের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আমাদের সেনাবাহিনীর শেখার ও প্রশিক্ষণের অনেক কিছু রয়েছে। এ সহায়তা কাঠামোগত। এতে থাকবে শিক্ষাসফর, প্রশিক্ষক বিনিময়, চিকিৎসা সফর বিনিময়, টহল অনুশীলন ইত্যাদি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার নিজেরই দায়িত্বে এমন কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, যতক্ষণ আমি বেঁচে আছি, ততক্ষণ বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী কিছু হবে না, এটা মনে রাখবেন। সামরিক সহায়তা চুক্তির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এমন চুক্তি এখন বিশ্বের অন্তত ১৩টি দেশের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের। আর ছয়টি দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিও রয়েছে।
চীনের সঙ্গে সামরিক চুক্তি রয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা পাল্টা সাংবাদিকদের কাছেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, বিএনপির আমলে হওয়া সে চুক্তিতে কী রয়েছে আপনারা জানেন?
ভারতের সঙ্গে চুক্তিতে সহজ শর্তে অতি নমনীয় ঋণ নেয়া হয়েছে, যা দিয়ে বাংলাদেশ তার প্রয়োজন ও নিজের ইচ্ছাতেই যেকোনো দেশ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারবে। সে স্বাধীনতা বাংলাদেশেরই থাকবে, এতে দেশ বিক্রি হয়ে যায় না। এমনকি পাকিস্তানের কাছ থেকেও বাংলাদেশ সামরিক সরঞ্জাম কেনে বলে শেখ হাসিনা জানান।
এদিকে পানি বণ্টন নিয়ে পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিকল্প প্রস্তাবের বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মমতা যেমন আমাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন, তেমনি আমিও তাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি বলেছেন তোর্সা, সঙ্কোশ ও রাইদাক নদী থেকে আমাদের পানি দেবেন। আমি বলেছি, এ তিনটি নদীর পানি আমাদের না দিয়ে তারাই তা তিস্তায় নিয়ে যাক। তারপর সেখান থেকে আমাদের দেয়া হোক।
একই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মমতা ঢাকায় এসে বলেছিলেন পানি দেবেন, আমার এবারের সফরেও তিনি পানি না দেয়ার কথা কিন্তু বলেননি। তবে আশপাশের কিছু নদীকে মিলিয়ে যৌথসমীক্ষার কথা বলেছেন।
অবশ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হবে। তিনি যখন বলেছেন, আমরা অপেক্ষা করতেই পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আছি ভাটিতে। আমাদের কাছে পানি আসবেই। কেউ আটকে রাখতে পারবে না। বৃষ্টি বেশি হলে তো পানি ছাড়তেই হবে। তখন সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
অপর এক প্রশ্নে হাসিনা বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বপূর্ণ সম্পর্ক সহজ করে তুলতে আগেও কাজ করেছেন। তিনি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের পক্ষে এ কথা জানিয়ে আরও বলেন, বৈরিতা রেখে আঞ্চলিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনায় ভারতের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি, বিজেপির উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি এলকে আদভানি ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নিরসনে শেখ হাসিনার মধ্যস্ততার প্রস্তাব দেন। সে বিষয়েই প্রশ্নটি আসে সংবাদ সম্মেলনে।
এ দায়িত্ব পালনে তার আগ্রহ কতটুকু? সে প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে তিনি তিন-দেশীয় সরকার প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। তা কিছুটা ফল এনেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি তখন জাতিসংঘ মহাসচিবকে এ প্রস্তান দেন যে, তিনি ব্যক্তিগত কিছু উদ্যোগ নিতে চান। সে উদ্যোগ নিয়ে সেবার তিনি পরপর ভারত ও পাকিস্তান সফর করেন এবং তার মধ্যদিয়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধংদেহি ভাবটা কমে আসে। শেখ হাসিনা বলেন, সে কারণেই হয়তো এল কে আদভানি তার প্রস্তাবটি দিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা থাকবে, কিন্তু যুদ্ধংদেহি থাকা মোটেই উচিত নয়।
এক প্রশ্নে হাসিনা বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেয়া গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তা হতো বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী। এটি করা হলে সুফলের চেয়ে হিতে-বিপরীতই হতো। তাই এমন একটি ভুল প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এমন কিছু করতে হলে তা ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে করতে হবে। সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য এমন প্রকল্পের খরচও যৌথভাবে বহন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তায় শুষ্ক মৌসুমে যাতে পানি পাওয়া যায় সেজন্য আমরা বর্ষা মৌসুমে বাড়তি পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারি। এজন্য আমরা জলাধার (রিজার্ভার) তৈরি করতে পারি। এজন্য আমরা পশ্চিমবঙ্গকে বলেছি, তোমরাও জায়গা দেখো, আমরাও জায়গা দেখি। যাতে জলাধার নির্মাণ করে বর্ষায় পানি ধরে রাখতে পারি এবং শুষ্ক মৌসুমে তা কাজে লাগাতে পারি। আমাদের এমন ব্যবস্থার দিকে যেতেই হবে।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত সফরে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে বিজনেস ফোরামে যোগদান করি। ফোরামে বাংলাদেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশের চিত্র তুলে ধরি এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ-ভারতের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ৯ বিলিয়ন ডলারের ১৩টি চুক্তি এবং এমওইউ এগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভারতের গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ দিল্লির ‘পার্ক স্ট্রিট’- এর নতুন নামকরণ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রোড’ উদ্বোধন নিয়েও কথা বলেন হাসিনা। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ব্যবসায় যৌথ বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতে নিজেদের ব্যবসায়িক পার্টনার খুঁজে পেয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশের ভেতরে আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি, পরিকল্পিত শিল্পায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাংলাদেশ-ভারতে ব্যবসায়ীরা যেন যৌথভাবে কিংবা ভারতের ব্যবসায়ীরা যেন সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ করতে পারেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে পহেলা বৈশাখে দেশবাসীকে ইলিশ না খাওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা ইলিশ খাবেন না, ইলিশ ধরবেন না। কারণ, এখন ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী পহেলা বৈশাখের একটি খাদ্য তালিকাও দেন। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে খিচুড়ি খাবেন, সবজি খাবেন। মরিচ ভাজা, ডিম ভাজা ও বেগুন ভাজা খাবেন।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্ধুপ্রতীম ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ তাৎপর্যময়। এছাড়া ভারতে বিভিন্ন বৈঠক ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে গিয়ে তিনি জানান, এ সফরে ভারতের সঙ্গে ৩৫টি দলিল, ২৪টি সমঝোতা স্মারক ও ১১টি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে এবং বর্তমানে তা এক বিশেষ উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন গতির সঞ্চার হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার বাস্তবঘনিষ্ঠ উদ্ভাবনমুখী অর্থনীতি গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে। আমি নিশ্চিত একসঙ্গে কাজ করলে, এ অঞ্চলের মানুষের জীবন আমরা বদলে দিতে পারব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পদ্মা ব্যারেজ নির্মাণ, নদীর অববাহিকা-ভিত্তিক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত সুরক্ষা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, আন্তঃযোগাযোগ তথা কানেকটিভিটি, জনযোগাযোগ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সমপ্রসারণ, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আমরা নিজ নিজ দেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত পোষণ করি।
তিনি বলেন, আলোচনাকালে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে ২৫শে মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে গৃহীত হওয়ার কথা জানাই। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়ে আমাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।