ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন করে, বিএনপি করে মানুষ হত্যা আর লুটপাট। এটি হচ্ছে বিএনপির আসল চরিত্র। বিএনপির পেট্রোলবোমা হামলার শিকার হয়ে ২৩১ জন মারা গেছে, ৩ হাজার ৩৬ জন আহত হয়েছে। ৩ হাজার ৫২টি গাড়ি পুড়িয়েছে। ৯টি লঞ্চে আগুন দিয়েছে। আহতের মধ্যে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। জামায়াত-শিবির-বিএনপির হাত থেকে কোরআন শরিফ, মসজিদও রক্ষা পায়নি।
শনিবার বিকালে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিতে জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
একাধিক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপি দেশের উন্নয়ন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিএনপি দুর্দিনেও নাই উন্নয়নেও নাই। কিন্তু আমি আপনাদের সামনে খালি হাতে আসিনি। অনেক প্রকল্প নিয়ে এসেছি। যে কাজগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলো উদ্বোধন করেছি। যেগুলো করব, সেগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু এখানে পর্যটক আসে, সেহেতু তাদের যাতায়াতের জন্য বিমান নিয়ে এসেছি। এই বিমান আজ কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম অবতরণ করলো। আমি এই বিমানের মাধ্যমে এখানে আন্তর্জাতিক রুট পরিচালনার ঘোষণা দিলাম।
হাসিনা বলেন, এ কক্সবাজারবাসী অবহেলিত ছিল আমি জানি। যখনই কোনও দুর্যোগ দেখা দিয়েছে আমরা এসেছি, আপনাদের সেবা করেছি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। এতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিএনপি নেত্রী জানতেন না। আমি সংসদে তোলার পর উনি বলে দিলেন, যত মরার কথা, তত মানুষ মরে নাই। আমি প্রশ্ন করেছিলাম, কত মানুষ মরলে আপনার তত মানুষ হবে?
এরপর আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ছুটে এসেছিলোম। আসার পথে কঠিন অবস্থায় পড়তে হয়েছিল। রাস্তা ভাঙা ছিলে। এরইমধ্যে এসে সমস্ত দ্বীপাঞ্চল ঘুরে ঘুরে রিলিফ ওয়ার্ক করেছি। তখন পর্যন্ত বিএনপি সরকারের কেউ আসেনি। যখন কুতুবদিয়াতে নামি লাশের পর লাশ পড়ে ছিল। নেভির লোক কোনোভাবে লাশ দাফন করেছিল। সেইদিনই সেনাবাহিনীর একটি দল এসেছিল। প্রত্যেক এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের লাশ, শিশুর লাশ আমি নিজে দেখেছি। সাপ গরুর লাশ, ছোট্ট শিশুর লাশ ভেসে ভেসে আসছে। সেই বিভৎস দৃশ্য। যতটা পেরেছি মানুষকে সহায়তা করেছি। রিলিফ দিতে এসে হুমকির সম্মুখীন হয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতা দখল করে, তারা জনগণের কথা ভাবে না। তারা ক্ষমতা ভোগ করে আর কিছু এলিটকে লুটপাটের সুযোগ করে দেয়। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমি শাসক না জনগণের সেবক হিসেবে বাংলাদেশ পরিচালন করব। আমার বাবা দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, আমি জানি এটা আমার জন্য কঠিন পথ। কারণ এই মাটিতে আমার বাবা-মা-ভাইসহ পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একইদিনে মেজ ফুফুর বাড়ি সেজ ফুফুর বাড়িতে আক্রমণ করে তার স্বামী ছেলেকে হত্যা করেছে, আমার ছোট ফুফুর বাড়িতেও আক্রমণ করে ফুফাকে না পেয়ে ফুফুকে গৃহবন্দি করেছে। এভাবে হত্যাযজ্ঞ চলেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের জন্য কাজ করে, জনগণের জন্য কাজ করে। প্রত্যেক মানুষ সুন্দরভাবে জীবন যাপন করবে। যাদের ঘর নেই তাদের ঘর করে দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কা জনগণের মার্কা, যখনি নৌকায় ভোট দেয়া হয় তখনি দেশ উন্নয়ন হয়।
হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন করেছি। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কও চার লেনে উন্নীত করা হবে। বিশ্বসভায় তার সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ ও তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।