ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিগত অবৈধ হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় পরে গুম খুনের শিকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের পরিবারের অব্যক্ত বেদনার সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘যারা হারিয়ে গেছে, তারা শুধু আপনাদের ছেলে নয়, আমাদেরও ছেলে। তাদের স্নেহ করতাম, ওরা দলের জন্য অনেক কষ্ট করেছে।’
আজ মঙ্গলবার এক ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এমন মন্তব্য করেন ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল লেকশোরে খুন-গুমের শিকার হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের স্বজনদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, 'আমি আশা করছি, জালেম অত্যাচারি বিদায় হলে দেশে তখন তাদের খোঁজ পাবো, তখন তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। আমরা সেই আশায় আছি'। আজীবন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নিয়ে ক্ষমতাসীনরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ‘গুম’ করেছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘ তারা (সরকার) ভেবেছে যে, বিএনপিকে শেষ করতে গেলে এসব ভালো ছেলেদেরকে শেষ করে ফেলতে হবে, তাহলে বিএনপি দূর্বল হবে, বিএনপির কিছু হবে না। তারা আজীবন ধরে ক্ষমতায় থেকে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে যাবেন। সেজন্য তারা এসব কাজগুলো করেছিলো ক্ষমতায় আসার পর থেকেই।’’
‘‘ এর আগেও তারা(আওয়ামী লীগ) এসব করেছিলো, কিন্তু এরকম হয়নি। এবার ক্ষমতায় এসে যা করেছে তা অবর্ণনীয় ও অকল্পনীয়।”
আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় হলে নিখোঁজ হওয়া নেতা-কর্মীদের সন্ধান পাওয়া যাবে- এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বেগম খালেদ জিয়া বলেন, ‘‘ আমরা এখনো আশা করি যে, তারা আ্ছে, একদিন ফিরে আসবে। আপনারা দেখে যে, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলেকেও ধরে নিয়ে গেছিলো, কয়েক মাস পর তাকে তার বাড়ির কাছে ফেলে দিয়ে গেছে। এরকম আরেকজন হলো খোকন।”
‘‘ তারা (সরকার) যাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে, তারা জানতো যে, এরা ভালো ছেলে, এরা কাজ করে দলের জন্য। ওরা ভেবেছে যে, এসব কর্মীদেরকে শেষ করে ফেলতে পারলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্র দলের সদ্য নিহত নুরুল আলম নুরুর শিশু কণ্যা উম্মে হাবিবা মীম, সেলিম রেজা পিন্টুর বোন রেহানা পারভীন মুন্নী, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আখি, নুরুজ্জামান জনির স্ত্রী মুনিয়া পারভীন, ৩ মাস ১৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর সন্ধান পাওয়া ছাত্র দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনও বক্তব্য রাখেন।
মূল মঞ্চে বিএনপি মহাসচিবসহ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন, মাহবুব হাসান সুজনের মা রাশিদা বেগম, মো. জহিরের মা হোসনে আরা, এসএম আদনান চৌধুরীর বাবা রুহুল আমিন চৌধুরী, নাজমুল স্ত্রী সাবিরা নাজমুল, সদ্য নিহত চট্টগ্রাম ছাত্র নেতা নুর আলম নুরুর স্ত্রী সুমী আখতারসহ নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার করেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
ইফতারে নিখোঁজ ও হত্যাকান্ডে নিহত নেতা-কর্মী পরিবারের মধ্যে ছিলেন, বিএনপির চৌধুরী আলম, জাহিদুর করিম তানভীর, আলম হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মো. মাসুম. মো. শামীম, মাসুদ হোসেন, মারুফ শেখ, যুব দলের নুরে আলম, আফজাল হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনির, সেলিম শাহিন, মেহেদি আলম মাহাবি, স্বেচ্ছাসেবক দলের এম আদনান চৌধুরী, মো. কাউসার, শ্রমিক দলের ওয়াদুদ ব্যাপারী, ছাত্র দলের আসাদুজ্জামান রানা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, মো. আলমীন, মাহবুব হোসেন সুজন, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লা, কাজী ফরহাদ হোসেন, খালেদ হোসেন সোহেল, মো. সোহেল, মো. জহির, মো. পারভেজ হোসেন, মো. চঞ্চল, তরিকুল ইসলাম ঝন্টু, নিজামউদ্দিন মুন্না, তরিকুল ইসলাম তারা, মফিজুল ইসলাম রাশেদ, আবদুল কাদের ভুঁইয়া মাসুম, নুরুজ্জামান জনি, মাহবুবুর রহমান বাপ্পী, আমিনুল ইসলাম জাকির, মাসুদ রানা, মো. জিহাদুর রহমান, মো. রাহাত, মো. জসিম উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, মেহেদি হাসান রাজু, এহসানুল হক খোকন, মিজানুর রহমান টিটু, আরিফুল ইসলাম মুকুল, সাইফুর রহমান সজীব, মো. হাসান, ইফতেখার আহমেদ দিনারের পরিবারের সদস্যগণ।
বিএনপির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাইফুল আলম নিবর, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, কাজী আবুল বাশার, শায়রুল কবির খান প্রমূখ ইফতারে অংশ নেন।