ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সৎমেয়েকে টানা ৮বছর ধরে ধর্ষণ এর অভিযোগে করা মামলায় শব্দ প্রকৌশলী আরমান হোসেন ওরফে সুমনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম জাকির হোসেন টিপু এ আদেশ দেন।
ধর্ষণের অভিযোগ করে সৎবাবার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে রমনা মডেল থানায় মামলা করেছেন বর্তমানে ২০ বছর বয়সী ওই মেয়ে। আরমান হোসেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪-এর শব্দ প্রকৌশলী। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মালিবাগ এলাকা থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আট বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণ করে আসছিলেন তার সৎবাবা আরমান হোসেন। একপর্যায়ে মেয়েটির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে তার এক বন্ধুকেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের
সোশ্যাল মিডিয়ার মনিটরিং টিমের পরিদর্শক মো. নাজমুল নিশাত গতকাল আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, মামলার আলামত ও ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। শুনানি শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
নাজমুল নিশাত বলেন, এ আসামি প্রাথমিকভাবে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
মামলার এজাহার : মামলার এজাহারে মেয়েটি উল্লেখ করেন, তার বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০০৫ সালে আরমান হোসেনকে বিয়ে করেন তার মা। দ্বিতীয় বিয়ের এক বছর পর থেকে মায়ের কাছে থাকা শুরু করেন মেয়েটি। চাকরির কারণে মেয়েটির মা মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের বাড়ি থেকে সকালে কর্মস্থলে চলে যেতেন। ২০০৮ সালের কোনো একদিন দুপুরে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটিকে আরমান প্রথম ধর্ষণ করেন। এ সময় মেয়েটির আপত্তিকর ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন আরমান। ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আরমান এরপর থেকে প্রায়ই ধর্ষণ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করেন মেয়েটি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরে গর্ভপাত ঘটান। এরপরও তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে যান আরমান। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ওই মেয়ে তার এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেও কুপ্রস্তাব পাঠাতে থাকেন আরমান। এতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটির এক বন্ধুকে ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠান আরমান।
এ ছাড়া আরমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে দুটি নকল আইডি খুলে মেয়েটি তার ছবি যুক্ত করার অভিযোগ আনেন।
মেয়েটির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র থেকে জানা গেছে, আরমানের এই নির্যাতনের কথা মেয়েটির মা জানলেও কিছুই করতে পারেননি। দু-একবার চেষ্টা করলেও তাকে নানাভাবে হুমকি দিতেন আরমান।