দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিকৃত একটি ছবিসহ কটুক্তিমূলক লেখা ফেসবুকে পোষ্ট করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবি আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ।
গতকাল তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোষ্ট করা ছবিটিতে ফটোশপের মাধ্যমে খালেদার মুখের উপর মেকাপের আবরণ লাগানো হয়। খালেদার অতি সাজগোজের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি চড়া রোদে ভচকে যাওয়া প্লাস্টিকের পুতুলের চেহারার সাথে খালেদার চেহারার তুলনা করেন।
তবে শাওন মাহমুদ বোধহয় ভুলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগে নিখোজ হয়ে যাওয়া সঙ্গীতজ্ঞ আলতাফ মাহমুদের ব্যাপারে তার প্রিয় হাসিনার বাবা শেখ মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগ চরম অবহেলা করলেও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম শহীদ আলতাফ মাহমুদকে স্বাধীনতা পুরষ্কারে ভুষিত করেছিলেন।জিয়া পরিবারের প্রতি সেই কৃতজ্ঞতা তিনি এভাবেই প্রকাশ করলেন।
এদিকে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এই বুদ্ধিজীবি কণ্যার এমন কটু মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সম্প্রতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য এবং ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে মিথ্যাচার করেও তিনি ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন।
শাওন মাহমুদের পরিচয় তুলে ধরে কামরুল আহসান নোমানী নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শাওন মাহমুদের পরিচয় কি? উনি শহীদ বুদ্ধিজীবী সুরকার আলতাফ মাহমুদের কন্যা। এর বাইরে শাওন মাহমুদের আর কি পরিচয় আছে আমি জানিনা। নিজের কাজ দিয়ে সমাজে আলোচিত হয়ে উঠার মত কোন অর্জন উনার আছে বলেও আমি শুনিনি। বাবার পরিচয়েই উনি পরিচিত। শাওন মাহমুদ কিছুদিন আগে মওদুদ আহমেদের বাড়ি নিয়ে মিথ্যাচার করে ধরা খেয়েছিলেন। তার এই মিথ্যাচার নিয়ে তখন বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল, এরপর কিছুদিন তিনি ফোকাসের বাইরে ছিলেন, গতকালকে বেগম জিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে কুৎসিত একটা পোস্ট দিয়ে তিনি আবারও আলোচনায় এসেছেন। বোঝা যাচ্ছে শাওন মাহমুদদের আলোচনায় আসতে হলে মিথ্যাচার অথবা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে নোংরামি করা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই।’
রাশেদ খান নামে একজন অনলাইন একটিভিষ্ট তার ফেসবুকে লিখেন, ‘যুদ্ধের পুরো সময়টা শাওন মাহমুদের বাপেরা পাকিস্তানীদের কাছে থেকে সব সুবিধাদি নিসে।অতিরিক্ত খাইতে গিয়া রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা খাইয়া আজকে “শহীদ” টাইটেল গায়ে লাগাইছে। আর এখন মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙ্গিয়ে এই সরকারের কাছে থেকে খাচ্ছে ও সামনে আরো খাওয়ার ধান্দায় আছে। তাই হাসান মাহমুদের সাথে পাল্লা দিয়া বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে এবং ফেসবুক স্ট্যাটাস দিতে এদের বিবেকে লাগছে না। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধ নামক শব্দরে নিয়া এরা এত বেশী ব্যাবসা করছে যে, আমার নিজের জেলার সদর হাসপাতালে এক রণাঙ্গনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা’র ছেলেরে পর্যন্ত শহীদের সন্তান পরিচয় দিয়া লাঞ্ছিত হতে দেখছি। ‘পাকি ভাতা-পাকিস্থান জিন্দাবাদ’ কইয়া’ও ‘শহীদ’ টাইটেল অর্জন করা আলতাফ মাহমুদের মাইয়া শাওন মাহমুদ আজকে শহীদ কন্যা।’
আহসান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এই ‘রহস্যময় শহীদ’ বুদ্ধীজীবীদের সন্তানেরা সরকারের বেশ আনুকূল্য পান। মিডিয়ায় হাইলাইটস হন। আর পাকিস্তানী হানাদারদের সাথে সম্মুখ সমরে শহীদ হওয়া বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে কাঁধে করে হাড়ি পাতিল ফেরি করে বেড়ায়। এটাই আমার বাংলাদেশ।’
ফজলে এলাহী নামে একজন লিখেছেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে রসিকতা বা কটাক্ষ করার আগে শাওন মাহমুদের উচিৎ ছিল বিএনপি সরকারের আমলে তার বাপ আলতাফ মাহমুদকে দেয়া একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক দুটো ফিরিয়ে দেয়া । পদক দুটো’র প্রবর্তনও করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান । ……যদি নূন্যতম লজ্জাবোধ ও পিতার প্রতি কিঞ্চিৎ শ্রদ্ধাবোধ শাওন মাহমুদের থাকে তাহলে বিএনপি সরকারের আমলে পাওয়া পদক দুটো ফিরিয়ে দিয়ে বলুক ” বিএনপির দেয়া কিছুই নিবো না ”।