ব্যারিস্টার আবু সায়েমঃ ক্ষমা!!!
ক্ষমা চাইতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। ক্ষমা চাইতে হবে অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে। ক্ষমা চাইতে হবে অবৈধ সংসদের স্পীকারকে। ক্ষমা চাইতে হবে প্রধান বিচারপতিকে।
ক্ষমা ভিখ মাগতে হবে নতমস্তিষ্কে, করজোড়ে ও অনুশোচিত হৃদয়ে।
৫৫ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ নামক ছোট্ট ভূখণ্ডটিতে ষোল কোটি মানুষকে ভালো রাখার দায়িত্ব ছিল এ রাষ্ট্রের। সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে আমাদের আইন বিভাগ, ব্যর্থ হয়েছে নির্বাহীরা এবং ব্যর্থতার দায়ভার বিচার বিভাগেরও। পরিণতির মাশুল তাই গুণতে হবে
তাদেরকেই।
মসনদ আঁকড়ে থাকার অদম্য লিপ্সা যাদের, হালুয়া-রুটির ভাগাভাগিই জীবনের একক প্রত্যয় বলে মেনে নিয়েছে যারা, যে পরাশ্রয়ী-পরান্নভোজী স্বর্ণলতাদের কারণে আমরা সাধারণরা আজ প্রজা বনে গেছি – ক্ষমা চাইতে হবে তাদের সবাইকে।
নুরু, জনি, জীশান, বাপ্পিরা কবেই চলে গেছে। কতদিন খোঁজ নেই ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হীরুদের! অবুঝ সন্তানরা আজও বাবার পথ চেয়ে বসে আছে। পঙ্গুত্বের যন্ত্রণা নিয়ে প্রতিদিন জীবনের বোঝা টেনে চলেছে ঢাকার নয়ন, লক্ষ্মীপুরের নেসার, পাবনার মাসুম বিল্লাহসহ হাজারো তরুণ-যুবক। অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সর্বশেষ চোখ হারিয়েছে তিতুমীর কলেজের সিদ্দিক। কষ্ট সইতে সইতে আমাদের চোখের পানি শুকিয়ে গেছে, অন্তরের আহাজারি এখন অন্তরকেই কুড়ে কুড়ে মারে।
অতএব, ভাগাড়ের নিম্নাংশে জন্ম নেওয়া কোন এক নৈর্ব্যক্তিক অপদার্থের ক্ষমা চাওয়াতে আমার কিছুই আসে যায়না। ক্ষমা চাইবে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের ধ্বজাধারীরা। সারিবদ্ধ কাতারে দাঁড়িয়ে হাঁটু গেড়ে ক্ষমা চাইতে হবে শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, লেখক, কবি-সাহিত্যিক, উকিল, ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশ, সেনাসদস্য, রাজনীতিবিদদের। অপরাধী সবাই যারা চোখ বুজে না দেখার ভান করছে ক্রসফায়ার-গুম-খুন-নির্যাতনের ঘটনা। অপরাধী তারাও যারা নিরাপদে থেকে সমর্থন দিচ্ছে, উৎসাহ যোগাচ্ছে পাপকাজে। অপরাধ মার্জনা হয় না তাদেরও যারা জুলুমের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছে বিবেকের মাথা খেয়ে। ক্ষমা চাইতে হবে এদের সবাইকে।
তবেই আমাদের কলম থামবে।
লেখকঃ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আইনজীবি, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ।