DMCA.com Protection Status
title="৭

জামায়াত কানেকশনে তীব্র সমালোচনার মুখে ওবায়দুল কাদেরঃ ৫ ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কৃত।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীর সাথে নিজের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যপক  সমালোচিত হওয়ার পর নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘উনি আমাদের এমপির স্ত্রী। এমপি সাহেব এসেছেন আমার সাথে দেখা করতে। আমি কি তার স্ত্রীকে বাদ দিয়ে তার সাথে ছবি তুলব? আমি কি তাকে বলব যে, ‘আপনি সরে যান? তিনি কি জামায়াতের সদস্য?’

রোববার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষুব্ধ কাদের বলেন, একেক সময় এক-একটা চলবে আর কি? শুরু হয়েছে ওই হেফাজত নিয়ে। হেফাজতের ঝড় এখন নেই। এখন আপনারা আবার শুরু করেছেন একজন এমপির স্ত্রীকে নিয়ে। এটার পর আবার আরেকটা শুরু হবে। এগুলোর বাস্তবতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে।

রিজিয়া মহিলা আওয়ামী লীগের পদ পাওয়ার পর সৃষ্ট সমালোচনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘নদভী সাহেব আজ প্রায় চার বছর ধরে আওয়ামী লীগের এমপি। এই চার বছর কিন্তু তাকে নিয়ে কোনও কথা হয়নি। তার স্ত্রী যদি জামায়াত নেতার সন্তান হন, তাহলে চার বছর ধরে তো এই সন্তানের স্বামী হচ্ছেন আমাদের এমপি। এই এমপিকে নিয়ে এতদিন কেউ কোনও কথা বলেনি, রিজিয়ার বিষয়েও কেউ কোনও বিতর্ক সৃষ্টি করেনি।’

কাদের বলেন, ‘এখন তো রিজিয়ার প্রশ্ন; তার সন্তানেরও আওয়ামী লীগ করার অধিকার থাকবে না? তার হাজবেন্ডের সাথে সে আওয়ামী লীগ করতে পারবে না? তার বাবার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। এই অবস্থাকে আপনারা কি বলবেন? ’

এর আগে জেলা কমিটি থেকে রিজিয়াকে বাদ দেওয়ার সংবাদকে ‘মিথ্যা কথা’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রিজিয়া জামায়াতের কর্মী না। সে আওয়ামী লীগের কাজ করছে।’

রিজিয়া ছাত্রী সংস্থার নেত্রী ছিলেন- এমন অভিযোগের বিষয়ে কাদের বলেন, দিস ইজ নট ফ্যাক্ট। সে তো বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ে নাই।

ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করায় ৫ ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কারঃ

 এদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ৫ ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ নিয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেক নেতা বলেছেন, রাজাকারের পক্ষ নিলে নেতার সমালোচনা করা যাবে না এটা দুঃখজনক। নেতাদের এই ধরনের আচরনের জন্য ছাত্রলীগকে চরম মূল্য দিতে হবে। দলে অনেক বিতর্কিতরা প্রশ্রয় পাবে। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে আমরা এটা মানতে পারছিনা।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গতকাল সোমবার ৫ ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- ছাত্রলীগের উপ-বেসরকারী বিষয়ক সম্পাদক শামীম হোসেন শুভ, ঢাকা কলেজের যুগ্ম-আহবায়ক মেহেদী হাসান রবিন, বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয় শাখার সাবেক প্রচার সম্পাদক সুশোভন অর্ক, ছাত্রলীগের সদস্য আশিকুর রহমান অনু ও শাসসুল আরেফিন পলাশ। ছাত্রলীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে এদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা বলেন, আমাদের নেতা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের বিরুদ্ধে লেখালেখি করায় এদের বহিষ্কার করা হয়। তাদের লেখালেখির জন্য আমাদের নেতার মানহানি ঘটেছে। তাই এদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তারা যদি ভুল স্বীকার করে তাহলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ব্যাপারে বিবেচনা করবে।
এ নিয়ে রীতিমতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, সংগঠনের শৃক্সক্ষলা ভঙ্গের দায়ে এদের বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনে অনেক অভ্যন্তরীন বিষয় থাকে যেটা বলা যায় না। তিনি আরও বলেন, তাঁরা যদি ভুল সংশোধন করে তাহলে তাদের ব্যাপারে আমরা বিবেচনা করব।

সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, বিশৃক্সক্ষলার জন্য তাদের আমরা সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছি। তাঁরা দলের বিরুদ্ধে কাজ করে শৃক্সক্ষলা ভঙ্গ করেছে বলে আমরা বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে তারা যদি ভুল সংশোধন করে তাহলে তাদের ব্যাপারে আমরা বিবেচনা করব।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!