DMCA.com Protection Status
title="৭

আইন মন্ত্রানালয়ের শোকসভায় জিয়াউর রহমানকে কুলাঙ্গার বললেন আইন সচিব জহিরুল হক।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আইনসচিব আবুল সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বলেন, ‘কোনো আদালতের রায়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। কারও রায়েও হয়নি। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। ভাই মুক্তিযোদ্ধা। এক ভাই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। জাতির জনকের ডাকে তাঁরা যুদ্ধে যান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমান নামের একজন কুলাঙ্গার এ দেশটার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে গেছেন।’

 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে আইনসচিব এসব কথা বলেন। আজ দুপুরে বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নিবন্ধন পরিদপ্তরের কার্যালয়ে এই আলোচনা সভায় আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আইনসচিব আবুল সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বলেছেন, ‘বড় গলায় কথা বলবেন না। কারও রায়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। জাতির জনককে অস্বীকার করা, তাঁর একক নেতৃত্বকে অস্বীকার করা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে অস্বীকার করার শামিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আদালত কোনো সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে) মামলা করেনি।’

বাংলাদেশের প্রথম প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক একজন প্রধান বিচারপতি—এ কথা উল্লেখ করে জহিরুল হক বলেন, ‘বড় গলায় কথা বলবেন না। একজন প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন একজন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। বিচার বিভাগকে কলুষিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আদালত কোনো সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে) মামলা করেননি। তখন কোথায় ছিলেন বড় বড় বক্তারা? যাঁরা গণতন্ত্রের কথা বলেন, মুক্ত আলোচনার কথা বলেন।’

আইনসচিব আরও বলেন, ‘কুলাঙ্গার জিয়াউর রহমানের দলটি যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন জঙ্গি হামলা হয় না। তখন গণতন্ত্রের মুক্ত বিকাশের আলোচনা হয় না। তাদের মিছিল-মিটিংয়ে কিন্তু কোনো বোমা হামলা হয় না। আমি এই পদে থেকে এ কথা বলা ঠিক নয়, এমন কথা অনেকে বলবেন। আমি তো বলব, অবশ্যই ঠিক। আমাদের মধ্যে শত্রু ঢুকে পড়েছে, আমাদের সাবধান থাকতে হবে। জাতির জনককে অস্বীকার করা, তাঁর একক নেতৃত্বকে অস্বীকার করা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে অস্বীকার করার শামিল। এসব কিসের আলামত?’

হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের চিন্তা
একই অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার নেপথ্যে যেসব লোক জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের চিন্তা করছে সরকার।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর কোনো এজাহার হয়নি জানিয়ে ক্ষোভের সঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আগে যদি মামলা হতো তাহলে যাঁরা পরিকল্পনাকারী ছিলেন, যাঁরা পেছনে ছিলেন, তাঁদের কিন্তু ধরা যেত। তদন্তে প্রমাণিত হয় বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান জড়িত। যখন তদন্ত শেষ হয়, এর ১৫ বছর আগে তিনিই মারা গেছেন। ১৯৭৫ সালের পর যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা কোনো বিচার করেননি। যদি বিচার হতো, তাহলে কথা উঠত না। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বিচার হয়নি। আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের চিন্তা করা হচ্ছে। যে কমিশন অন্তত ইতিহাসের জন্য রেখে যেতে পারবে, কারা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে সংবিধান দিয়ে বঙ্গবন্ধু হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট তৈরি করে গেছেন, সেই সুপ্রিম কোর্টের অনেক বিচারপতি তাঁর হত্যার বিচার করতে বিব্রতবোধ করেছেন। আমাদের জন্য এগুলো লজ্জার। হত্যার ২১ বছর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। যাতে বিচার না হয়, সে জন্য ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছিল।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আইন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক, নিবন্ধন পরিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক খান মো. আবদুল মান্নান, অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, ইসরাইল হোসেন, নাসরিন বেগম, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা প্রমুখ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!