ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে মিয়ানমারে অতি সাম্প্রতি নিরীহ রোহিঙ্গাদের উপর সরকারী বাহিনী এবং বৌদ্ধ জনগোষ্টির নির্মম নির্যাতন ও গনহত্যার ঘটনায় দেশে এবং বিদেশে সচেতন নাগরিকগন সোচ্চার হয়ে উঠলেও বাংলাদেশের অবৈধ হাসিনা সরকার এক্ষেত্রে নিন্দা না জানিয়ে বরং হামলাকারী মিয়ানমার সরকারেরই পক্ষ নিলো।
মিয়ানমার সীমান্তে ইসলামিক জঙ্গি এবং আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার বিকালে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত অং মিনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাব জানানো হয়।
এসময় সীমান্তে নিরাপত্তাহীনতা কমিয়ে আনতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সহায়তা কামনা করা হয়।
গত শুক্রবার ভোররাতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায় এবং ওই হামলায় ৮৯ জন নিহত হয় বলে দাবি করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
এর পরপরই দেশটির সেনাবাহিনী পশ্চিম অঞ্চলের মংডু, বুতিডং এবং রাতেডং জেলাকে ঘিরে ফেলে কথিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
এসব এলাকায় প্রায় আট লাখ মানুষ বসবাস করে। সেনাবাহিনী ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে।
মিয়ানমারে নতুন করে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার থেকে রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এবার রোহিঙ্গা প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
শনিবার থেকে সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে অনেককে গ্রেফতার করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে সোমবার বিকালে মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত রাস্ট্রদুত অং মিনকে এ প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করে, যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র এবং প্রচণ্ড বৈষম্যের শিকার।
রোহিঙ্গারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও এই সংখ্যালঘু জাতিকে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী গণ্য করা হয়।
মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রহীন করে রেখেছে। জাতিসংঘ মনে করে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যে দমনাভিযান চালায় তা জাতিগত নিধনের শামিল। তবে অং সান সু চি সরকার এ অভিযোগ ক্রমাগত নাকচ করে আসছে।