ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ত্রাণ টিম কক্সবাজার পৌঁছেছে।আজ বুধবার তারা ত্রান বিতরন করবেন বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছেন।
সন্ধ্যায় কক্সবাজারের হোটেল লংবীচের সম্মেলন কক্ষে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ দিতে আসা প্রতিনিধি দলের প্রধান মির্জা আব্বাস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে যে ভয়াবহ, অমানবিক, নির্মম জুলুম, নির্যাতন ও অত্যাচার চলছে, তা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম গণহত্যা।
তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিবাদ জানাতে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, সমগ্র বিশ্ব যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে, সমস্ত মানবতা যখন রুখে দাঁড়িয়েছে, তখন বাংলাদেশের সরকার যারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি, যাদের জনগণের সাথে সম্পর্ক নাই, তারা আজকে অনেকদিন পর রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের দেখতে আসায় বিএনপির পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের নির্যাতিত জনগণ ও মিয়ানমারের সহিংসতার শিকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পাশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি অতীতেও ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
“আজকে বিএনপি জোট সরকার যদি ক্ষমতায় থাকত, তাহলে কূটনৈতিক তৎপরতা ও নির্যাতিতদের আরো সহযোগিতা করে রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনন করত।”
ত্রাণ টিমের প্রধান বলেন, বিশ্ব মানবতার জন্য মানবিক কারণে যেকোনো দুঃস্থ মানুষকে আশ্রয় দেয়া ও তাদের পাশে দাঁড়ানো মৌলিক দায়িত্ব। আমাদের সংবিধানেও সেটা পরিষ্কার বলা আছে, বিশ্বমানবতার পাশে সবসময় দাঁড়াতে হবে।
সেখানে বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একটাই, এই সরকার গণবিচ্ছিন্ন সরকার। তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই।’
তাই অবৈধ হাসিনা সরকার দায়সারাভাবে অনেকদিন পর জনগণ ও বিএনপির চাপে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে যাবতীয় সহযোগিতা করে যাবে।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি ছিল শুরু থেকেই। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হোক, তাদের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
একইসঙ্গে সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করা হোক- এই রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।’
প্রথমে বিএনপি দাবি উপেক্ষা করে গেলেও এখন সরকার সেটাই করতে বাধ্য হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন ও শামসুজ্জামান দুদু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে আগামীকাল বুধবার মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নিতে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় যাবেন।
শরণার্থী ক্যাম্প ও এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ত্রাণ বিতরণ করবেন।