ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অবৈধ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ‘যানজট ও দূষণমুক্ত নগরায়ণের প্রয়োজন: গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি তথাকথিত জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সো কলড জাতীয় ঐক্য ডেকে লিপ সার্ভিস (বক্তৃতা সর্বস্ব) দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। শুধু সরকারের সমালোচনা করলেই কী জাতীয় ঐক্য হয়ে যায়? জাতীয় ঐক্য কি তাদের মুখে না মনে আমি জানতে চাই।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মিয়ানমারের এই নির্যাতন হচ্ছে মানুষের ওপর মানবতার ওপর। মানবতার যেই অপমান হচ্ছে আমরা তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছি। এখন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দিতে প্রথমে দেশের মধ্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে।’
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে আজ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের মুখের কথা আর মনের কথা এক নয়।
এটা এতদিনে প্রমাণ হয়ে গেছে। যেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে, স্যানিটেশন দেয়া হচ্ছে, মেডিকেশন দেয়া হচ্ছে, খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে; বাস্তবে তারা ওই উখিয়া-টেকনাফ গিয়ে পরিস্থিতি দেখে কথা বলছে না। সুতরাং আমি বলব- তারা লিভ সার্ভিস দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়া বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার মানবিক ও সাহসিক ভূমিকার প্রশংসা করছে। বাংলাদেশের জনগণ, বিশ্ববাসী বর্তমান সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ঠিক তখন বিএনপি ঢাকায় বসে বসে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে লিভ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘প্রথম প্রথম তারা বলছিল যে, তাদের ত্রাণ দিতে দেয়া হচ্ছে না।
আমি যেদিন যাই, দেখি একই প্লেনে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাহেব ছিলেন।
আমি বললাম, আমি এখানে আছি; আপনাদের কে বাধা দেয় জানাবেন। আমি আমার নাম্বার দিয়েছি। আমার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক ছিল। তার নাম্বার তারা নিয়ে গেছেন এবং পরের দিন কয়েকবার তাদের আমি জিজ্ঞেস করেছি কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। তারা একটা ক্যাম্প করেছেন। আমি সেটার সামনে দিয়ে গিয়েছি, তারা বলেছেন যে কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে ৪/৫ লাখ লোক, তাদের ভিতরে ১০/২০ ট্রাক নিয়ে যাবে তা তো লুট হয়ে যাবে যদি নিয়ম না মানেন।
আপনার নিজেরও নিরাপত্তা থাকবে না। কী যে অবস্থা তা ভাবতেও পারবেন না। ঢাকায় বসে প্রেস রিলিজ দেওয়া যায়, মায়া কান্না দেখানো যায়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনের দিক থেকেও দরিদ্র।
সরকার মেট্রিকুলাসলি ওর্গানাইজ করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করে, বিশ্ব দরবারে জনমত গড়ে তুলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জাতিসংঘে।
তিনি যে প্রধানমন্ত্রী খচিত বক্তব্য রাখলেন, তাতে আমরা আশা করছি বিশ্বের নামি-দামি দেশগুলো মিয়ানমারের এই অমানবিক টর্চারের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হবে। আমি মনে করি, বিএনপি বাস্তবে বক্তৃতা সর্বস্ব কথা বাদ দিয়ে কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নিবে। যে নেতিবাচক পথ বেছে নিয়েছে তারা, তা থেকে ফিরে আসবে।’
মেট্রোপলিন পুলিশ, পারিবেশবাদী আন্দোলনসহ ৪৬টি সংগঠন আয়োজিত অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এন ছিদ্দিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ মুখার্জী, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন উপস্থিত ছিলেন।