ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগের মামলায় আগামী ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে শেষ বারের মত সময় দিয়েছেন আদালত।
ওইদিন আদালতে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে।
বৃহস্পতিবার মামলাটিতে খালেদা জিয়ার স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হননি। এজন্য ঢাকা মহানগর হাকিম মো: নূর নবী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে সর্বশেষ বারের মত সময় দিয়ে আগামী ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওইদিন আদালতে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
এরআগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে আজ বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত। ওই দিন বিচারক তার আদেশে উল্লেখ করেন, আসামি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হলেও তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর নয়। শুধুমাত্র মানহানি সংক্রান্ত, যা জামিনযোগ্য। ফলে আসামিকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে বলা হলো। আত্মসমর্পণে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে সিএমএম আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ওইদিন আদালত তেজগাঁও থানার ওসিকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।
চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর গত ২২ মার্চ তা আমলে নিয়ে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রী পরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রকাশ্যে এবং আত্মস্বীকৃতিরূপে পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আলবদর, আলসামস কমিটির সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি বানান। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদন্ডসহ বিভিন্ন দন্ডে দন্ডিত হয়েছেন।
তার মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রীত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রী সভায় মন্ত্রীত্ব প্রদান করে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে উক্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলন্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হয়।