ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিতর্কিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এর আগে তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান খালেদা জিয়া।
আদালত জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এক লাখ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত জানান, অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারবেন খালেদা জিয়া।
পরে আত্মপক্ষ সমর্থন করে খালেদা জিয়া বলেন, শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে মামলার বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আদালতে উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি একটি উদাহরণ উল্লেখ করতে চাই। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুদক একটি মামলা করে। ওই মামলায় একজন বিচারক তাঁকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন, পরবর্তীতে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু তৎপরতা চালানো হয়, যার ফলে সেই বিচারক সপরিবারে দেশ ছেড়ে চলে যান।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘মাননীয় বিচারক, আপনি যেখানে বসে বিচার করছেন, যে এজলাসে বসেছেন, এটা কোনো আদালতের প্রাঙ্গণ নয়। ফখরুদ্দীন-মঈনউদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক আমলে সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষ আদালত বসানো হয়, সেখানে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাংসদদের বিরুদ্ধে করা মামলার বিচারের ব্যবস্থা করা হয়।’
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ছিল এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর সেই মামলাগুলো একে একে প্রত্যাহার ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, শাসক দলের মন্ত্রীরা বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। মাননীয় আদালত, আমি কার কাছে যাব? আমি আদালতের প্রতি বিশ্বাস রাখতে চাই।’
১২ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
তিন মাস পর যুক্তরাজ্য থেকে গতকাল বুধবার দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। যুক্তরাজ্যে থাকতেই ঢাকা ও কুমিল্লায় নাশকতা, দুর্নীতি ও মানহানির পাঁচটি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। হঠাৎ করে দুই দিনে এসব মামলায় আদালতের পরোয়ানা জারির প্রেক্ষাপটে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা উৎকণ্ঠা ছিল। কেউ কেউ গ্রেপ্তারের আশঙ্কা করেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য চলছিল।