দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা জয়নালের পায়ে গুলি করার ঘটনায় উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবং প্রভাবশালী পরিবহন নেতা মন্জুুুুরুল আলম মন্জু কে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঞ্জুরুল আলমের অনুসারী নেতাকর্মীরা আজ রোরবার সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের হাটহাজারী চৌমুহনী বাসস্টেশন মোড়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করছে। মঞ্জুরুল আলম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও প্রভাবশালী পরিবহন নেতা।
জানা যায়, শনিবার (২১ অক্টোবর) দিনগত গভীর রাত ১২ টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর আউটার স্টেডিয়াম সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাবের সামনে থেকে মঞ্জুরুল আলমকে আটক করে কোতয়ালী থানার ওসি জসিম উদ্দিন। মঞ্জুরুল আলম এ সময় মদ্যপ ও অসংলগ্ন ছিলেন বলে জানান তিনি।
ওসি জানান, যুবলীগ নেতা জয়নাল ও আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অফিসার্স ক্লাবেই ছিলেন। সেখান থেকে রাত ১২টায় বের হবার পথে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
এক পর্যায়ে মঞ্জুরুল আলম নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল বের করে জয়নালের পায়ে গুলি করে।
এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মঞ্জুরুল আলমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আহত জয়নালকে রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার করে তার পা থেকে গুলি বের করা হয়েছে। জয়নাল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ওসি জসিম উদ্দিন জানান, জয়নাল আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা। তার ভাই মো. আলমগীর আনোয়ারা থেকে নির্বাচিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের কাউন্সিলর। আলমগীর এ ঘটনায় কোতেয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে মঞ্জুরুল আলমকে আটকের খবরে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের হাটহাজারী চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তার অনুসারীরা। রোববার সকাল নয়টায় সড়কে আড়াআড়িভাবে বাস রেখে ব্যারিকেড দিলে দু‘পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সড়কের চৌমুহনী বাস স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম থেকে নাজিরহাট-ফটিকছড়ি উপজেলা, রাউজান-রাঙ্গুনিয়া উপজেলাসহ খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় যানবাহন চলাচল করে। ফলে এ ব্যারিকেডের কারণে বাস স্টেশন মোড়ে চর্তুমুখী শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগের কবলে পড়ে।
রাঙামাটি থেকে আসা কামাল উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী হাটহাজারী বাস স্টেশনে আটকা পড়া একটি বাস থেকে মুঠোফোনে বলেন, চৌমুহনী ঘিরে চারপাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়েছে। চৌমুহনী মোড়ে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করছে। তবে তাদের বেশিরভাগই পরিবহন শ্রমিক। আশপাশের দোকানপাটগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আটকে পড়া যানবাহনের শহরমুখী নারী-শিশুসহ যাত্রীরা পায়ে হেঁটে হাটহাজারী বাস্টেশন মোড় পেরোচ্ছে। এরপর সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ভাড়া বেশি হাঁকায় বিপাকে পড়েছেন অনেকে।
হাটহাজারী থানার এসআই মণির হোসেন জানান, মঞ্জুরুল আলমের গ্রুপের লোকজন মোড়ের প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে কোনো যানবাহন নাজিরহাট-ফটিকছড়ি, রাউজান-রাঙ্গুনিয়া, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি সড়কে ঢুকতে পারছে না। একইভাবে এসব সড়কের কোনো যানবাহন চট্টগ্রামের দিকে যেতে পারছে না।
তিনি বলেন, বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের সামাল দিতে তিন-চারশ পুলিশ হিমসিম খাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও দুপুর ১ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ব্যারিকেড তোলা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।