ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে আসাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সচিবদের সঙ্গে সংলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিন মাস ধরে ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিনে সাবেক সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবদের পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কেএম নুরুল হুদা। উল্লসিত সিইসি এ সময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনারতরী কাব্যগ্রন্থের মানসসুন্দরী কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি পাঠ করেন। কবিগুরুর ভাষায় তিনি বলেন, আজ কোনো কাজ নয়- সব ফেলে দিয়ে/ছন্দ বন্ধ গ্রন্থ গীত- এসো তুমি প্রিয়ে/আজন্ম-সাধন ধন-সুন্দরী আমার/কবিতা, কল্পনালতা।
সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ফেলে আসা পুরনো দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকানোর সুযোগ হলো। এ সুযোগে আপনাদের স্বাগত, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে নুরুল হুদা বলেন, ধারাবাহিক সংলাপের আজ শেষ দিন। সুদীর্ঘকালের সুশৃঙ্খল চাকরি জীবনের চমৎকার সব অর্জন থেকে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অংশটুকু আমাদের বলুন।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, ৪০টি নিবন্ধিত দল, পর্যবেক্ষক ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে বসে প্রায় তিন মাস ধরে অনেক মূল্যবান কথা শুনেছি। অনেক ভারী মতামত এসেছে। আজ আপনাদের পেয়ে অনেকটা হালকা অনুভব করছি।
সাবেক সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের পেয়ে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, আজ বিচিত্র অভিজ্ঞতার গল্প শুনতে চাই। গল্প পরামর্শ আকারে গ্রহণ করব। যতœসহকারে তা সংরক্ষণ এবং বাস্তবে তা প্রয়োগ করব।
এই সংলাপে বিচারপতি এমএ আজিজের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সদস্যরা অংশ নেননি। সাবেক সিইসি মোহাম্মদ আবু হেনা ও কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ অনুপস্থিত থাকলেও তাদের কমিশনের সদস্য ও সাবেক সচিবরা অংশ নেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন সংলাপকালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ২২টি ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব দেন। নির্বাচন চলাকালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সেনাবাহিনী রাখার পক্ষে মত দেন এ সাবেক কমিশনার। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ভোটের আগে ও পরে মাঠে সেনা মোতায়েন রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই।
সংলাপে সাবেক সিইসি বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ও এটিএম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, এম সাখাওয়াত হোসেন, মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ, সাবেক ইসি সচিব ড. এএফএম মহিউর রহমান, সাবেক আইজিপি মোহম্মদ হাদীস উদ্দীন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুল করিম, সাবেক সচিব এএসএম ইয়াহিয়া চৌধুরী, মনজুর হোসেন, হুমায়ুন কবীরসহ সাবেক স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, পুলিশ ও মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েক শীর্ষ কর্মকর্তা অংশ নেন।