ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোর বিরোধী কিছু আওয়ামী বিশিষ্টজন। রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান অস্থিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত কোনটিই বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে না। যারা চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, তারাই এ ধরনের দাবি তুলছে।
তারা আরো বলেন, নির্বাচন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। এ সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন কোনভাবেই ঠিক হবে না। এতে করে অন্য বাহিনীকে ছোট করা হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটি আয়োজিত এক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ব্যারিস্টার সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী আর বিএনপি একে অপরের সমার্থক। যেখানে বিএনপি সেখানেই সেনাবাহিনী। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি অযৌক্তিক। কারণ এতে করে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত হবে। আর এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নিকট অতীতে হয়ে যাওয়া নির্বাচনগুলো।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা নানা ধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মন্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বিএনপির বেশিরভাগ প্রস্তাবনাই বাস্তবসম্মত নয়। বিএনপি চায় সেনাবাহিনী আসুক। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা চায় না। কারণ দুই পক্ষ দুটি ভিন্ন ঘরানার রাজনীতি দেখে অভ্যস্ত।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব গণতন্ত্র পরিপন্থী। নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনাগুলো গণমুখী। তৃণমূলের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত দারুণ সাহসী উদ্যোগ। এ ছাড়া ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন করার প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলি শিকদার বলেন, সামনেই নির্বাচন। কিন্তু এখন থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আর এর সাথে সেনাবাহিনীকে জড়িত করার চেষ্টাও চলছে। কিন্তু এর ফলাফল দেশের জন্য হবে ভয়াবহ।
নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব দূরভিসন্ধিমূলক। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে করে বাহিনীটি রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়বে। কারণ তাদের কাজ হচ্ছে প্রতিরক্ষার দিক দেখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নয়। এ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণও সেনাবাহিনীর নেই। তাছাড়া এর ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্য বাহিনীগুলোকে ছোট করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে সচেতন হতে হবে। কারণ অতীতে অনেক বার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ক্ষমতা হারিয়েছে আওয়ামী লীগ।
সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।