DMCA.com Protection Status
title="৭

অবশেষে ৩৭ বছর পর নিজদলের অনাস্থায় ক্ষমতা হারালেন রবার্ট মুগাবে।

 ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে অনেক জল  ঘোলা করার পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন জিম্বাবুয়ের ৩৭ বছরের শাসক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে।  দির্ঘ প্রায় ৪ দশক ক্ষমতায় থাকার পর নিজের হাতে গড়া দলের অনাস্থার কারনে  ৯৩ বছর বয়সে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হলেন বিশ্বের অন্যতম দির্ঘস্থায়ী স্বৈরশাসক রবার্ট মুগাবে।

রোববার ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফ এর কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিশেষ সভা থেকে মুগাবের বহিষ্কার আদেশ দেওয়ার  ঠিক আধা ঘন্টা পরেই দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন ৩৭ বছর ক্ষমতায় থাকা জীম্বাবুয়ের রাষ্ট্রপতি রবার্ট মুগাবে। এদিকে, জানু-পিএফ এর দেয়া ২৪ ঘন্টা সময়সীমার আধা ঘন্টা পার না হতেই মুগাবের অব্যাহুতির সংবাদ নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

এর আগে জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের পদত্যাগের দাবি উঠে সারা বিশ্ব থেকে। গত বুধবার সেনাবাহিনীর নীরব অভ্যুত্থানের পর দুদিন গৃহবন্দি থাকা মুগাবে শুক্রবার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাজির হলেও প্রেসিডেন্ট পদে তাকে আর কেউ দেখতে চাইছে না। তার নিজের রাজনৈতিক দল জানু-পিএফ পার্টির আঞ্চলিক শাখাগুলো তাকে পদত্যাগ করতে শুক্রবার আহ্বান জানিয়েছে।

সেনাবাহিনী, বিরোধী দল, জানু-পিএফ পার্টি ও জিম্বাবুয়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন সব পক্ষই মুগাবের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, সেনাবাহিনী যে কাজ শুরু করেছে, মুগাবেকে পদত্যাগে বাধ্য করে তারা তা শেষ করবে।

সেনাবাহিনীর পূর্ণ সমর্থনে শনিবার রাজধানী হারারেতে মুগাবেবিরোধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এ সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হবে ধারণা করা হচ্ছে। তার আগেই ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ পার্টি মুগাবের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে তাকে পদত্যাগ করার জন্য বলল।

মুগাবের অনুগত মুক্তিযোদ্ধা ও উদারপন্থিদের সংগঠনও তাকে পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছে। ১৯৮০ সালে জিম্বাবুয়ে স্বাধীন হলেও মুগাবের অনুগত থেকেছেন অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা। তারাও এবার তার প্রতি ‘না’ বলছেন।

মুগাবের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চরম রূপ নেয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বহিষ্কার করেন মুগাবে এবং নানগাগওয়ার স্থলে তার স্ত্রী গ্রেসকে বসানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ পার্টির একাংশ মুগাবের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। মুগাবের চেয়ে প্রায় চার দশক কম বয়সি গ্রেসকে তার উত্তরসূরি হিসেবে মেনে নিতে নারাজ সেনাবাহিনীও। তারা মঙ্গলবার রাত থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ ও ট্যাংক নিয়ে রাজধানী হারারে দখল করে এবং সপরিবারে মুগাবেকে গৃহবন্দি করে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা মুগাবের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং জনগণকেও তাদের মতামত ব্যক্ত করতে বলেছে তারা। শিগগিরই একটি ফলাফল আসবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার জানু-পিএফ পার্টির ১০টি আঞ্চলিক শাখার মধ্যে আটটিতে ভোটাভুটি হয়, যেখানে সবগুলোতে প্রেসিডেন্ট ও দলীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে মুগাবের পদত্যাগের পক্ষে ভোট পড়ে। এ ছাড়া আঞ্চলিক নেতাদের অনেকে টেলিভিশনে হাজির হয়ে মুগাবের পদত্যাগ দাবি করেন- যেমনটি এর আগে দেশটিতে কখনো দেখা যায়নি।

মুগাবের স্ত্রী গ্রেসকেও দল থেকে পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে তাদের দুজনের ওপরই পদত্যাগের চাপ বাড়ছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!