ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজ অমর চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান এর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
তিনি ছিলেন একাধারে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, এবং প্রযোজক। একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
জনপ্রিয় গায়ক অাগুন তার সুযোগ্য সন্তান।
স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন ছিলেন গুনী সঙ্গীত শিল্পী।
কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ছিলেন তাঁর শ্যালিকা।
দস্যি ছেলে বলতে যা বোঝায় তার সবকিছুই তাঁর মধ্যে ছিলো দৃশ্যমান। চলচ্চিত্র অভিনয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়ে পালাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে পরিবারের বেরসিক সদস্যের চোখে পড়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তার বোহেমিয়ান স্বভাবের কারণে সেখানে থাকলেন না। এ বছরেই তিনি লন্ডনে ফটোগ্রাফি বিষয়ক একটি বৃত্তি লাভ করেন। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে সেখানে যাননি।
১৯৪৯ সালে আবার তিনি বাড়ি ছেড়ে পালাবার চেষ্টা করেন। এবারো উদ্দেশ্য ছিল একই। প্রথমে মুম্বাই যান। মুম্বাই গিয়ে তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন, চলচ্চিত্র জগতের আনাচে কানাচে গিয়েছেন। ১৯৫০ সালের জানুয়ারিতে চলে আসেন করাচি। করাচী এসে যোগ দেন রেডিও পাকিস্তান এ সংবাদপত্র পাঠক হিসেবে। এখানেই আরেকজন প্রতিভাবান বাঙালি ফতেহ লোহানীর সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। তখনো চলচ্চিত্রের ব্যাপারে তার উৎসাহ কমেনি।
এরই মধ্যে তিনি লন্ডনের সিটি লিটারেরি ইন্সটিটিউটে থিয়েটার ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হন। পরের বছর ইউনেস্কো বৃত্তি নিয়ে চলে যান নেদারল্যান্ডে। ১৯৫৫ সালে আবার লন্ডনে ফিরে এসে থিয়েটার রয়াল, ইউনিটি থিয়েটার, আরভিং থিয়েটারে সকল স্থানীয় গ্রুপের সাথে কাজ করতে থাকেন। এসময় তিনি কিছুদিন বিবিসি’র সাথেও কাজ করেছেন। ১৯৫৭ তে ফিরে আসেন ঢাকায়। এসেই তিনি পাকিস্তান অবজারভারে চাকরি নেন। এরপর তিনি রেডিওতে গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক, আবৃত্তিকার এবং অভিনেতা হিসেবে যোগ দেন।
এর পরের গল্প সবার জানা। অাবার তোরা মানুষ হ, সুজনসখী, সাতভাই চম্পা, নবাব সিরাজউদ্দৌলাসহ অনেক অালোচিত চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। ১৯২৮ সালের ১১ ডিসেম্বর খান আতার জন্ম মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে।
১৯৯৭ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি চিরপ্রস্থান করেন। বাংলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এই বটবৃক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা।
তার লেখা এবং সুর করা গান, একনদী রক্ত পেরিয়ে
বাংলার অাকাশে রক্তিম সূর্য অানলে যারা
তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না………তাকে আমাদের মনে চিরদিন অমর করে রাখবে।