ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘বিএনপি’র মালিকানা দাবিতে নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টে দায়েরকৃত মামলাটি নাকচ করা হয়েছে। একই আদেশে আরো বলা হয়েছে যে, ‘এই মামলায় জয়ী হবার কোন সম্ভাবনাও দেখছে না আদালত’। কুইন্সে অবস্থিত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেনিস টেইলর ( ঔধহরপব ঞধুষড়ৎ )গত ১৫ নভেম্বর এ আদেশ প্রদানের পর ২০ নভেম্বর তা নথিভুক্ত হয় এবং ১ ডিসেম্বর শুক্রবার তা বিবাদিপক্ষের এটর্নী নটরাজ এস বু’সহান হস্তগত হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্কের জ্যাকব মিল্টন নামক এক ব্যক্তি ‘বিএনপি ইউএসএ ইনক’, ‘তারেক রহমান ইনক’, ‘জিয়াউর রহমান ইনক’ নামে অলাভজনক কর্পোরেশন খুলে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলায় বিএনপি, জিয়াউর রহমান এবং তারেক রহমানের নাম এবং ছবি, বিএনপির লগো ও তাদের ছবি ব্যবহারের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানিয়েছিলেন। মামলার ইনডেক্স নম্বর ৭১৩৮৪০/১৭।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ৮ জন নেতাকে বিবাদি করা হয়। এই মামলার নোটিশ পেয়েই ঐ বিবাদিরা গত ৪ অক্টোবর মাননীয় আদালতে জবাব দানের জন্যে সময় প্রার্থনা করেছিলেন। মাননীয় আদালত ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব প্রদানের তারিখ ধার্য করেন। এমনি অবস্থায় বিবাদি মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল (যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক) এর এটর্নী নটরাজ এস বু’সহান বিএনপি ও তার কার্যবিধি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে মাননীয় আদালতে সাবমিট করেছিলেন।
সে আলোকেই মাননীয় বিচারপতি জ্যাকব মিল্টনের নিষেধাজ্ঞার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৮ নভেম্বর একটি চিঠি প্রেরণ করেন মামলার বাদি জ্যাকব মিলন্টন বরাবরে। সেই চিঠি মাননীয় আদালতে সাবমিটের আগেই বিচারক মামলার আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছেন বলে এটর্নী নটরাজ এ বু’সহান এই সংবাদদাতাকে জানান।
মাননীয় আদালতের সিদ্ধান্তের কপি এটর্নী নটরাজের কাছে গ্রহণের জন্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে টারট্যুরো ল’ ফার্মে গিয়েছিলেন মামলার অন্যতম বিবাদি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ বশির, মাহফুজুল মাওলা নান্নু এবং হুমায়ূন কবীর।
এ সময় অধ্যাপক দেলোয়ার এ সংবাদদাতাকে বলেন, ‘আমরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই প্রবাসে বিএনপির ঝান্ডা সমুন্নত রাখতে বদ্ধ পরিকর। আইনী হুমকি-ধমকি দিয়ে কোন লাভ হবে না।’ এ সময় অপর নেতা মোহাম্মদ বশির ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘জ্যাকব মিল্টন নামক ব্যক্তিটি কখনোই বিএনপির নেতা দূরের কথা, সমর্থকও নন। অর্থাৎ বিশেষ কোন মতলবে তিনি এই মামলা করেছিলেন।’
গত প্রায় ৫ বছর যাবত যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কোন কমিটি নেই। এ অবস্থায় বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিএনপির কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন প্রবাসের কর্মী-সমর্থকরা। জ্যাকব মিল্টনের ঐ মামলার পরিপেক্ষিতে এক ধরনের স্থবিরতায় আক্রান্ত হয়েছিল সাংগঠনিক তৎপরতা। মাননীয় আদালতের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে সকলে বলাবলি করছেন। ‘তবে তার আগে দরকার নতুন কমিটি’-উল্লেখ করেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু।