দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের সুরের পাখি শাম্মী আখতার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মঙ্গলবার বিকেলে বাসা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলেসহ আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। বিগত ছয় বছর যাবত এ শিল্পী ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
তার স্বামী সংগীতশিল্পী আকরামুল ইসলাম জানান, শাম্মী ছয় বছর ধরে ব্রেস্ট ক্যানসারে ভুগছিলেন। শাম্মী বাসায়ই ছিলেন।
আজ দুপুরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই বিকেল ৪টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এখন তার মরদেহ নিয়ে বাসায় ফিরে এসেছি ।
শাম্মী আখতারের গানে হাতে খড়ি বরিশালের ওস্তাদ গৌর বাবুর কাছে। এরপর নানান সময়ে বিভিন্ন জনের কাছে গানে শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের গানে শাম্মী আখতারের যাত্রা শুরু আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মধ্যদিয়ে। এই চলচ্চিত্রে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘আসি যেমন আছি তেমন রবো বউ হবোনারে’ এবং ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা পুরাইছে’। সত্য সাহার সুর সংগীতে এই দুটি গানের জনপ্রিয়তার কারণে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শাম্মী আখতারকে।
এরপর এ শিল্পী চলচ্চিত্রে প্রায় তিনশো গান গেয়েছেন। তার কন্ঠে জনপ্রিয়তা পাওয়া গানগুলো হচ্ছে ‘বিদেশ গিয়া বন্ধু তুমি আমায় ভুইলোনা’, ‘মনে বড় আশা ছিলো তোমাকে শুনাবো গান’, ‘চিঠি দিও প্রতিদিন চিঠি দিও’, ‘ভালোবাসলেই সবার সাথে ঘর বাধা যায়না’, ‘এই রাত ডাকে এই চাঁদ ডাকে হায় তুমি কোথায়’, ‘আমার মনের বেদনা বন্ধু ছাড়া বুঝেনা’, ‘আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী খোদার পরে তোমায় আমি বড় বলে জানি’, ‘আমি যেমন আছি তেমন রবো বউ হবোনারে’, ‘আমার নায়ে পার হইতে লাগে ষোল আনা’ ইত্যাদি।
দাফন সম্পন্নঃ
স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী শাম্মী আখতারের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বাদ জোহর, শান্তি নগরের চামেলীবাগের আমিনবাগ জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন সংগীতাঙ্গনে তার সহকর্মীসহ শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরা। জানাজা শেষে তাকে সমাহিত করা হয় শাহজাহানপুর কবরস্থানে। মরদেহের অবস্থার কথা বিবেচনা করে শহীদ মিনারে নেয়া হয়নি শাম্মী আখতারের মরদেহ।