দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ এ রকম পরিস্থিতি আরেকবার হয়েছিল, ২০০৭ সালে মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্ঘাতময় অবস্থায় সে সময় ক্ষমতা দখল করেছিল জে. মইনউদ্দিন আহমদ। তার শিখণ্ডি ছিলেন ফখরুদ্দীন আহমদ। তারা ক্ষমতা দখল করেই বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিদায় করে দিতে চেয়েছিলেন এই দুই নেত্রীকে। তারা দুই নেত্রীকেই গৃহবন্দী করে তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের না-হক মামলা দায়ের করে তাদের হেনস্থা করতে শুরু করেছিল। মামলা দিয়ে হেনস্থা করার পেছনে তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। তাদের লক্ষ্য ছিল, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে তাদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করা।
এতে প্রায় সাথে সাথে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারকে (যা ১-১১ সরকার বলে পরিচিত) এই বলে স্বাগত জানিয়েছিলেন যে, এই সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। অর্থাৎ লগি-বৈঠার যে আন্দোলনে তার দলের লোকেরা একদিনেই পিটিয়ে হত্যা করেছিল ১১ জন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে, সে আন্দোলনের ফসল নাকি ছিল এক-এগারোর সরকার।
শেখ হাসিনা শুধু এই সরকারকে স্বাগত জানাননি, তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, এক-এগারোর সরকার যা কিছু সিদ্ধান্ত নেবে, তার সব কিছুকেই ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বৈধতা দেবে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া কিছুতেই দেশ ছেড়ে যেতে চাননি। তিনি বারবার বলছিলেন, বাংলাদেশের বাইরে তার কোনো ঠিকানা নেই।
সুতরাং যা-ই কিছু ঘটুক না কেন, তিনি বাংলাদেশেই থাকবেন। এক-এগারোর সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে সৌদি আরব পাঠিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সৌদি দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হলো, খালেদা জিয়াকে যদি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে সৌদি আরব পাঠানো হয়, তাহলে সৌদি সরকার তাকে ভিসা দেবে না। বেগম খালেদা জিয়ার মনোভাব কী, এটা জানার জন্য সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করেন এবং নিশ্চিত হন যে, তিনি স্বেচ্ছায় সৌদি আরব চলে যেতে রাজি নন। তাই খালেদা জিয়াকে মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকার বিদেশে পাঠাতে পারেনি।
এর ফলে এক-এগারোর সরকার যে ‘মাইনাস টু’ ফরমুলা নিয়েছিল, তা আর বাস্তবায়িত হতে পারে না। খালেদা জিয়া দেশেই থেকে যান এবং তিনি শেখ হাসিনাকেও জোর করে বিদেশে রেখে দেয়া, তাকে বাংলাদেশে আর ঢুকতে না দেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। এতে সামরিক সরকার প্রাথমিকভাবেই হোঁচট খায়। তারপর বহু অপকীর্তিও কিন্তু খালেদা জিয়াকে টলাতে পারেনি। প্রকৃতিগত কারণে শেষ পর্যন্ত মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারকে রণে ভঙ্গ দিতে হয়েছে। তারা একটি পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর নীলনকশা করে।
ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বে তারা যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে সে ছিল পাতানো খেলাই। এই নির্বাচন কমিশন কোনো নিয়ম-নীতির মধ্য দিয়ে করা হয়নি। বরং করা হয়েছিল বল প্রয়োগের মাধ্যমে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেকে শুরু করে অপরাপর নির্বাচন কমিশনারকে রাষ্ট্রপতির চায়ের দাওয়াত দিয়ে হুমকি দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বে গঠন করা হয় নতুন নির্বাচন কমিশন। অনেকের এমনও মত আছে যে, সে নির্বাচন কমিশন নাকি খুব দক্ষতার সাথে নির্বাচন পরিচালনা করেছিল। এটি ডাহা মিথ্যা।
সেই নির্বাচনে বহু ক্ষেত্রে ১০-১৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। কিভাবে এটা সম্ভব হলো, তার কোনো জবাব নির্বাচন কমিশন দিতে পারেনি। পথেঘাটে পাওয়া যাচ্ছিল ব্যালট পেপারের মুড়ি। সেগুলো যখন জনসমক্ষে আসতে শুরু করল, তখন শামসুল হুদা নতুন আইন করলেন যে, যার কাছে মুড়ি পাওয়া যাবে তাকে গ্রেফতার করা হবে। বহু ভোটকেন্দ্রের আশপাশে পেয়েছিল এরকম মুড়ি। এভাবে শামসুল হুদা কমিশন একটি নির্বাচন করে মইন-ফখরের নির্দেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।
নির্বাচন কমিশন এখানেই থেমে থাকেনি। তারা প্রথমে সেনা শাসকদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করেছিল। বিএনপি ভাঙার জন্য তারা বেছে নিয়েছিল আবদুল মান্নান ভূঁইয়াকে। শামসুল হুদা ও মান্নান ভূঁইয়া ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। ফলে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে নেই এমন কাজও তারা করেছে। দল ভাঙার অপপ্রয়াসের জন্য বেগম খালেদা জিয়া যখন মান্নান ভূঁইয়াগংকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তখন শামসুল হুদার সে কি ক্রোধ! যা সত্যি সত্যি হাস্যকর ছিল এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অত্যন্ত বেমানান। এদিকে আওয়ামী লীগকে ভাঙার জন্য সেখানে গঠন করা হয় সংস্কারপন্থী গ্রুপ। এই গ্রুপে ছিল রাজ্জাক, আমু, তোফায়েল ও সুরঞ্জিত। তারা আওয়ামী লীগে সংস্কার আনার জন্য বেশ কতকগুলো প্রস্তাব উত্থাপন করেন। একই রকম প্রস্তাব উত্থাপন করেন মান্নান ভূঁইয়ারাও। কিন্তু সেসবে কোনো ফল হয়নি।
চূড়ান্তভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলই টিকে থাকে। পরে সেখানে শেখ হাসিনা আবদুর রাজ্জাক ছাড়া প্রায় সবাইকে দলে ফিরিয়ে নেন। কিন্তু জানিয়ে দেন যে, ফরগিভ করেছেন, ফরগেট করেননি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মান্নান ভূঁইয়ার বহিষ্কারের সময় এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে বলে বসলেন, ১৫ বছর দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে রয়েছেন, এ রকম ব্যক্তিকে কোনো শোকজ নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
যা হোক, মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের ‘মাইনাস টুু’ ফরমুলা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। বরং জনগণের অপরিসীম ঘৃণা নিয়ে মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছে।
এবারের খেলা ভিন্ন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ একদলীয় বিনা ভোটের এক নির্বাচন করে। তাতে ৫ শতাংশ ভোটার অংশ নিয়েছিল কি না সন্দেহ। সে নির্বাচন এতটাই অবিশ্বাস্য ছিল যে, অর্ধশত কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোট দেয়নি। এমন কি আওয়ামী লীগের যে ১৪ দলীয় জোট তাদের পোলিং এজেন্টরাও ভোট দেয়নি। সে ভোট বিএনপি বর্জন করেছিল। শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী জোটের বাইরে অন্য কেউই ২০১৪ সালের ভোটে অংশ নেয়নি।
ওই নির্বাচনে ১৫৩ আসনে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করেনি। সুতরাং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ জোটের প্রার্থীরা নির্বাচনের বিজয়ী হয়ে এসেছে। আর নির্বাচিত হয়েই বিএনপির ওপর একেবারে খড়গহস্ত হয়ে ওঠে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়। এ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭৮ হাজার, আসামি ১৮ লাখ। বিএনপি নেতাদের এক একজনের মাথার ওপর শতাধিক মামলা ঝুলছে। অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে। এ ছাড়া শারীরিক নির্যাতনের শিকার বিএনপির হাজারে হাজারে নেতাকর্মী। বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম-খুন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ রকম একটা পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ আবারো ‘মাইনাস ওয়ান’ ফরমুলায় এগিয়ে যাচ্ছে। এবারে এর পেছনে মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন নেই। কিন্তু স্বৈরাচারী মানসিকতাই এর পেছনে কাজ করছে।
এবার তারা রাজনীতি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে ও তার পরিবারকে চিরদিনের মতো বিদায় করতে চায়। একসময় এটা কল্পনারও অতীত ছিল যে, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে এক ভুয়া মামলায় আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দীজীবন-যাপন করছেন। বলা হচ্ছে, কুয়েত সরকারের অনুদানে যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠিত হয়, তাতে আড়াই কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক হিসেবে দেখা যায় যে ওই আসল টাকা সুদে-আসলে এখন ছয় কোটি টাকা হয়েছে। সুতরাং একে তো তছরুপ বলা যায় না। কোনো ভুল হয়ে থাকতে পারে, ভুল কোনো অপরাধ নয়। তার সহজে সংশোধনযোগ্য। কিন্তু সরকার সে দিকে না গিয়ে সেই ভুলটাকে বিবেচনায় নিয়ে খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। জনমানবহীন সেই কারাগারে তিনি একাই বন্দী, সেখানে আর কোনো মানুষ নেই।
বেগম খালেদা জিয়া যেমন আদালতে বলেছেন, তেমনি তার আইনজীবীরা বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। ন্যায়বিচার পেলে তিনি দ্রুতই বেরিয়ে আসবেন। এখানেও মানুষের মনে সংশয়ের দোলাচল থেকেই গেল। নিন্ম আদালনের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন। হাইকোর্ট তার চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ ছুটে গিয়েছিলেন চেম্বার আদালতে। চেম্বার বিচারপতি ‘নো অর্ডার’ দিয়ে তা বিবেচনার জন্য আপিল বিভাগের ফুলকোর্টে পাঠান। সেখানে আবার থমকে গেল খালেদা জিয়ার জামিন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের কোনো বক্তব্য না শুনেই আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন গত ১৪ মার্চ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বারবার বলছেন, তাদের বক্তব্য শোনা হোক। কিন্তু প্রধান বিচারপতি তাদের জানিয়ে দেন তাদের বক্তব্য রোববারই শোনা হবে।
আবার রোববার যাতে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও খালেদা জিয়া কারামুক্ত হতে না পারেন তার আয়োজনও পাকাপাকি আছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় বাস পোড়ানোর মামলা করেছিল সরকার। সে মামলার জামিন আবেদন খারিজ হয়ে গেছে এবং তাতে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছেন। ফলে এ মামলায় খালেদা জিয়াকে নতুন করে জামিন আবেদন করতে হবে। এরপর কোন মামলা আসে কে জানে!
সরকারের লক্ষ্য খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা। কারণ সরকার জানে তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। যদি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে সরকারের পরাজয় হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। অতি সামান্য আসনে সরকার দলের সদস্যরা জয়ী হয়ে আসতে পারে।
এখন সারা দেশে বিএনপি পুলিশের শত উসকানির মুখেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাতে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটছে। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সারা পৃথিবী বলছে, আগামী নির্বাচন হতে হবে সব দলের অংশগ্রহণে। সরকার বলছে, কেউ যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে তার সরকারের কী করার আছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে তারা কোনো পদক্ষেপ নেবে না। ফলে পরিস্থিতি এখন ঘোলাটে। যেসব মামলায় খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়েছে, এক-এগারো সরকারের আমলে সে সময় একই ধরনের মামলায় শেখ হাসিনাকেও আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেসব মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এটি এক যাত্রায় দুই ফল, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কারো কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার আশা করছে, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারলে বিএনপিতে ভাঙনের সৃষ্টি হবে। এবং সেই ভাঙনে বিএনপির একটি অংশ জাতীয় পার্টির সাথে মিশে যাবে। জাতীয় পার্টির এরশাদও একই কথা বলেছেন।
শেখ হাসিনার এই নীলনকশার সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়া ও তার দল সচেতন রয়েছে। দেশের মানুষ এখন একদলীয় শাসনে অতিষ্ঠ। তারা বিএনপির পতাকা ছেড়ে চলে যাবে বলে মনে হয় না। সরকার ব্যাংকগুলো লুট করছে। শেয়ারবাজারে কারসাজিতে লাখ লাখ মানুষ ফতুর করেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, সরকারদলীয় চাঁইরা দুর্নীতিতে ডুবে গেছে, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র চরম দলীয়করণের শিকার।
ফলে বাংলাদেশে এখন অব্যবস্থাপনা চরমে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখে দিয়েছিলেন, দেশে ফ্রি মার্কেট ইকোনমি চালু করেছিলেন। যার ফলে বাংলাদেশ চরম দরিদ্র অবস্থা থেকে উঠে এসেছিল। আন্তর্জাতিক বন্ধু ও অংশীদাররা বাংলাদেশে প্রশ্নবিদ্ধ গণতন্ত্র চায় না। কারণ উপমহাদেশে পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল অধিকতর গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসরমান। খালেদা জিয়ার জামিন পেতে কম সময় লাগুক বা বেশি সময় লাগুক, সেটি হয়তো বিবেচ্য বিষয় না। বিবেচ্য বিষয় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন কি না। বিএনপি সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। বিশ্বস্ত সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে জানিয়েছে, ‘শেখ হাসিনা সরকার যদি বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে রাজি না হয়, তাহলে ভারত যেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে সহায়তা থেকে বিরত থাকে।’
আবার অনেকেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সরকার যদি অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে ‘মাইনাস ওয়ান’ ফর্মুলা নিয়ে এগিয়েই যেতে থাকে, তবে তা ফের ‘মাইসাস টু’-তে পর্যবসিত হতে পারে।