ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সরকারের সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা দিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ বীরবিক্রম।
তিনি বলেন, আইজিপিকে এই অবৈধ সরকারের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়া উচিত। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক সংহতি সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এই সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ লেবার পার্টি (ইরান)।
মেজর হাফিজ বলেন, ‘কালকে দেখলাম পুলিশের আইজিকে সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা দেয়া হয়েছে। আমিতো মনে করি, তাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সম্পুর্ন ভাবে একটি পুলিশি রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের পুলিশ প্রধানকে অবশ্যই ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘এই পুলিশি রাষ্ট্রে জনগণের কোনো মৌলিক অধিকার নেই। বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা নেই। শিক্ষাঙ্গনে চলছে ব্যাপক নকল আর অনিয়ম।’
‘অবৈধ সরকারের’ বাজেটে জনগণের কোনো প্রত্যাশা মিটবে না দাবি করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই বাজেটের মাধ্যমে আগামী দিনে আওয়ামী লীগ একটি পরিকল্পিত কারচুপির নির্বাচন করতে যাচ্ছে। দলীয় নেতাদের চাঙ্গা করার জন্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে উৎকোচ দেয়া হবে। এতে জনগেণর কোনো কল্যাণ সাধন হবে না।’
এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি কার কাছে চাইব? দেশে কি কোনো বিচার ব্যবস্থা আছে, আইনের শাসন আছে? নেই। দেশে যে আইনের শাসন নেই তার প্রধান প্রমাণ হলো প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।’
বিচার বিভাগের প্রতি আবেদন জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘আপনারা আপনাদের মেরুদণ্ড শক্ত করুন। আপনারা আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখার জন্য শপথবদ্ধ। আপনারা রাজনৈতিক দলের দিকে তাকাবেন না। বিনা অপরাধে খালেদা জিয়াকে কারা-অন্তরীণ করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ, তার প্রতি আপনারা সুবিচার করুন।’ মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে সর্বসম্মতভাবে ঘোষণা করতে চাই- খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিএনপি এবং ২০-দলীয় জোট কোনো নির্বাচনে যাবে না। স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে চাই- আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেও বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘যদি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয়, আমরা নির্বাচনে যাব না। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজপথে নেমেছি, রাজপথে আরও শক্তভাবে নামবো। আমরা অপেক্ষা করে আছি সরকারের বোধদয় হয় কিনা।’
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘গাজীপুরের সিটি নির্বাচন পর্যন্ত আমরা দেখবো। তারপর ঈদের পর আমরা ২০-দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কী করণীয় হবে। বিএনপি কোনো দুর্বল দল নয়। ২০-দলীয় জোটের পক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ লোকের সমর্থন রয়েছে।’
লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, তৈমুর আলম খন্দকার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মিরপুর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দুলু, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।