ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কোন করন ছাড়াই মুশফিকুর রহীমের বদলে দ্বিতীয়বারের মতো টেস্ট দলের নেতৃত্বের ঝান্ডা উঠেছে সাকিব আল হাসানের হাতে। অধিনায়ক হিসেবে অ্যান্টিগা টেস্ট দিয়ে তার পথচলা শুরু। সাত বছর পর তার টেস্ট অধিনায়কত্বের শুরুটা কী ভয়াবহ! গোটা দল ডুবেছে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্নœ রানের লজ্জায়। সাকিবের পারফরম্যান্সও ‘জিরো’। ব্যাট হাতে রানের খাতাই খুলতে পারেননি, বল হাতে প্রথম দিনে পাননি কোনো উইকেট। বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের কাছে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনটা কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতোই!
অ্যান্টিগা টেস্টের মধ্য দিয়ে আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন সাকিব আল হাসান। অবশ্য এ রেকর্ডে নেই কোনো গৌরব, আছে শুধুই লজ্জা! বাংলাদেশের দুই ফরম্যাটে (টেস্ট ও ওয়ানডে) সর্বনিম্নœ দলীয় রানের ইনিংসের ম্যাচের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২০০৭ সালে শ্রীলংকার কাছে ৬২ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওই টেস্টের অধিনায়ক ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০১৮তে এসে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের দলপতি সাকিব।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের উত্তরসূরি স্টিভ রোডস। টাইগারদের হেড কোচ তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। অ্যান্টিগা টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে রোডসের পথচলা শুরু হলো। তবে শুরুর স্মৃতিটা ভুলে যেতে চাইবেন ইংলিশ কোচ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে প্রথম ইনিংসে তার শিষ্যরা অলআউট হয়েছেন ১৮.৪ ওভারে মাত্র ৪৩ রানে। টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে বাংলাদেশের এটি সর্বনিম্নরানের ইনিংস। লজ্জার রেকর্ড। ‘ভয়ঙ্কর’ স্মৃতি কেনইবা মনে রাখতে চাইবেন রোডস?
অ্যান্টিগা টেস্টের মধ্য দিয়ে আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন সাকিব আল হাসান। অবশ্য এ রেকর্ডে নেই কোনো গৌরব, আছে শুধুই লজ্জা! বাংলাদেশের দুই ফরম্যাটে (টেস্ট ও ওয়ানডে) সর্বনিম্ন দলীয় রানের ইনিংসের ম্যাচের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২০১৮তে এসে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের দলপতি সাকিব।
২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৮.৫ ওভারে ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা। এটাই বাংলাদেশের ওয়ানডেতে সর্বনিম্ন দলীয় রান। এই ম্যাচের অধিনায়কও সাকিব। অবশ্য ওয়ানডেতে আরও একবার ৫৮ রানে অলআউট হয়েছেন লাল-সবুজরা। ২০১৪ সালে ভারতের কাছে বৃষ্টি আইনে ৪৭ রানে হারা ম্যাচে বাংলাদেশের দলপতি ছিলেন মুশফিকুর রহিম।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রান ৭০। ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই রান করেছিল টাইগাররা। এই ম্যাচের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই তালিকায় সাকিব আছেন দুইয়ে। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭৮ রানে অলআউট হওয়া ম্যাচের অধিনায়ক ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
ক্রিটেক গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। টেস্টের তো পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে রোমাঞ্চ। এক সেশন, এক ওভারেই বদলে যেতে পারে ম্যাচের চিত্রনাট্য। তবে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা যে ‘বিস্ময়কর’ পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন তার কোনো ব্যাখ্যা আপাতত মিলছে না। ছন্নছাড়া ব্যাটিং আর নির্বিষ বোলিং আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছে টেস্টে টাইগারদের কঙ্কালসার দেহটা।
কেমার রোচ, মিগুয়েল কামিন্স ও জেসন হোল্ডারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহরা। তাদের কাছে উইকেট যেন ‘মৃত্যুকূপে’ পরিণত হয়েছিল। তাই তো ১৮.৪ ওভারে ৪৩ রানে অলআউট। প্রথম সেশনের খেলা তখনো ২১ মিনিট বাকি ছিল! অথচ উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা সেখানে ফুটিয়েছেন ফুল। ব্রাথওয়েট, স্মিথদের ব্যাটিংয়ের সময় উইকেটের আচরণ যেন বদলে গিয়েছিল। ২২ গজের ময়দান হয়ে উঠেছিল ব্যাটিং স্বর্গ। রোচ, কামিন্সরা লাইন-লেংথ বজায় রেখেছেন। তার সুফলও পেয়েছেন। বাংলাদেশকে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবিয়েছেন। অথচ রুবেল, রাব্বি, রাহীরা সে পথে হাঁটতে পারেননি। লাইন-লেংথ বজায় রেখে বোলিং করতে পারেননি।