DMCA.com Protection Status
title="৭

জোঁক চিকিৎসায় সুস্থ ১৫০ রোগী

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  গুরুতর অসুস্থ খোদ ওষুধ কোম্পানির মালিক। পায়ের আলসার কিছুতেই সারছে না। ক্ষতস্থানে জোঁক বসিয়ে চিকিৎসা করেছিলেন ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়। কলকাতা শহরে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা বেশ প্রচলিত। কলকাতার শ্যামবাজারের জেবি হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত জোঁক-চিকিৎসায় আলসার থেকে মুক্তি পেয়েছেন দেড়শ' রোগী। এমনই দাবি করেছেন হাসপাতালটির পঞ্চকর্ম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক পুলককান্তি কর। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

আয়ুর্বেদ মতে পঞ্চকর্ম বা ডিটক্সিফিকেশন থেরাপি হলো এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে শরীরের ক্ষতিকর বা বিষাক্ত উপাদান বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমেই শরীর থেকে বের করে দেয়া হয়।

পেরেক ঢুকে পচ ধরেছিল পায়ে। একটি অংশ অপারেশ করে বাদ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, রোগী যে আবার ‘ডায়াবেটিক’। পায়ে গ্যাংগ্রিনের জায়গায় জোঁক বসিয়ে দেয়া হয়েছিল। অপারেশন ছাড়াই দিব্যি সুস্থ হয়ে উঠেছেন ওই রোগী। এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি। শুধু আলসার বা গ্র্যাংগিনই নয়, সাদাস্রাব, সোরিয়াসিসি, ফাইলেরিয়ার মতো রোগও সারছে ‘লিচ থেরাপি’ বা জোঁক-চিকিৎসায়।

জেবি হাসপাতালে পঞ্চকর্ম বিভাগের প্রধান পুলককান্তি করের দাবি, ডায়াবেটিস, বিশেষ করে ডায়াবেটিক আলসার সারানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি বিচ থেরাপি বা জোঁক চিকিৎসা।

কিন্তু, কীভাবে এমনটা হয়? শরীরের পচনশীল অংশের দূষিত রক্ত দ্রুত শুষে নিয়ে নতুন রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে জোঁক। এমনকি রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। জোঁকের শরীর থেকে ডেস্টাবিলেস নামে এক ধরনের প্রোটিন প্রবেশ করে মানুষের দেহ, যা বহু জেদি জীবাণুকে মেরে ফেলে।

গবেষণা দেখা গেছে, জোঁকের শরীরে থাকা নিউরোসিগন্যালিং এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল পেপটাইড যেকোনো ধরনের সংক্রমণ কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। জয়েন্ট পেনেও দারুণ কাজ করে জোঁক থেরাপি। ব্যথার জায়গায় কিছুক্ষণ জোঁক রাখলে রক্ত সরবরাহের উন্নতি হয়। ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের প্রকোপ কমে যায়।

অধ্যাপক ডা. প্রদ্যুতবিকাশ কর মহাপাত্র জানান, সুশ্রুতের আমল থেকেই রক্তমোক্ষণ থেরাপি বা ‘ব্লাড লেটিং’ থেরাপি চলছে। জলৌকা থেরাপি তারই অংশ। এই পদ্ধতিতে ক্ষতস্থান বা রোগগ্রস্ত জায়গায় তিন-চারটি ‘হিরুডো মেডিসিনালিয়া’ বা নির্বিষ জোঁক বসিয়ে দেয়া হয়। এক একটি জোঁক ২ থেকে ১৫ মিলিলিটার রক্ত শুষতে পারে। সেই সঙ্গে মুখ থেকে এক ধরনের লালা মিশিয়ে দেয় রক্তে। যাতে হিরুডিন, ক্যালিক্রেইন, ক্যালিনের মতো কিছু উৎসেচক থাকে। যা রক্তের দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!