ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আবহাওয়া অধিদফতর আগেই জানিয়েছিল, মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সারাদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই কখনো মাঝারি কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে ঢাকায়। অনেকে শ্রাবণের এ বৃষ্টিকে ঘরে বসে কিংবা অফিসের বারান্দায় গিয়ে উপভোগ করলেও অধিকাংশ মানুষের কাছেই তা ভোগান্তির।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে যা গত সাতদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। সকাল থেকে থেমে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলজট ও যানজট দেখা দিয়েছে। জুতা হাতে হাঁটু পানি পাড়ি দিয়ে অনেককে হেঁটে হেঁটে গন্তব্য পানে রওনা হতে দেখা গেছে।
মধ্যরাতের বৃষ্টির কারণে সকাল থেকেই পানি জমেছে রাজধানীর ধানমন্ডি-২৭ নম্বর, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও মিরপুরের বিভিন্ন সড়কে।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থানরত জাগো নিউজের প্রতিবেদকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বৃষ্টিতে মিরপুর-১, ৬ ও ১০ নম্বর আল-হেলাল হাসপাতালের পাশের সড়ক, মিরপুর ১২ ও ১৩ নম্বর, কালশী রোড, পূরবী, বসুন্ধারা আবাসিক এলাকার মেইন গেট থেকে ডি ব্লক পর্যন্ত এবং ধানমন্ডির সড়কগুলোতে পানি জমেছে।
এ ছাড়াও পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড, সাতরাওজা, নাজিরা বাজার, বংশালসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে।
এদিকে সড়কে জলজটের কারণে যানজটের পড়েছে রাজধানীবাসী। রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, বাংলা একাডেমি, শাহবাগ, মিন্টু রোড, হাতিরঝিল, গুলশান-১, মহাখালী, মালিবাগ রেলগেট থেকে আবুল হোটেল, নীলখেত থেকে গাবতলী ও মিরপুরে প্রচণ্ড যানজট দেখা গেছে। সিগন্যাল ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বসে থাকতে হচ্ছে অফিস ও স্কুলগামীদের।
বৃষ্টিতে রিকশা চলাচল কম থাকায় অনেকেই পড়েছেন ভোগান্তিতে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ ভোগান্তি বেশি পোহাচ্ছেন। তাদের অনেককেই কাকভেজা হয়ে বাসায় ফিরতে দেখা গেছে।
অরূপ চক্রবর্তী নামের এক শিক্ষার্থী জানান, মিরপুর-১২ নম্বরে ছোট থেকে বড় হয়েছি। এখানকার গলিতে জন্মের পর থেকে পানি জমতে দেখিনি- আজকেই প্রথম দেখলাম।
রায়না আফরোজ নামে এক শিক্ষিকা জানান, মঙ্গলবার সপ্তাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্মদিবস। চাইলেও কেউ ঘরে থাকতে পারে না। মৌচাক থেকে আবুল হোটেলের সড়কের একপাশে সামান্য পানি জমেছে। অথচ বাসে ২০০ মিটারের এ সড়ক পার হতে সময় লাগলো ৪০ মিনিট। রামপুরা থেকে আবুল হোটেলের সড়কেও একই অবস্থা।
আহসান হাবিব লিমন নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, পূরবী থেকে মিরপুর-১০ আসতে লাগছে ২ ঘণ্টা ‘মাত্র’।
নীলক্ষেত-নিউ মার্কেট থেকে গাবতলীগামী এক বাসযাত্রী বলেন, ধানমন্ডিতে পানি জমার কারণে প্রতিটি সিগন্যালে ৩০-৪০ মিনিট করে বসে আছি। দেড়টার সময় রওনা দিয়ে এখনো (৩টা ৪০ মিনিট) গাবতলী পৌঁছাতে পারিনি।
সামিয়া তিন্নি নামের আরেক বাসযাত্রী বলেন, মিরপুর-১ থেকে নিউমার্কেট যাব। ২ ঘণ্টা পার হতে চললো এখনো পৌঁছাতে পারিনি।
এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও পানি নামেনি মিরপুর এলাকা থেকে।