ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই ৩ সিটি করপোরেশনে আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে সাম্প্রতিক এক জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে আশা প্রকাশ করেছেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
আজ রোববার তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠানের করা জনমত জরিপের তথ্য তুলে ধরে এই বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পুরো জুলাই মাস ধরেই এই জরিপ চালিয়েছে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
জয় লিখেছেন, ‘আমি যথেষ্ট আস্থা নিয়ে বলতে পারি, বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় হবে। সিলেটেও আমরা সামান্য এগিয়ে। তবে সেখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, 'আমার টিম বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে একটি জনমত জরিপ চালিয়েছে। বরিশালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে রয়েছে ৪৪ শতাংশ জনমত। ১৩.১ শতাংশ মানুষ রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী মজিবুর রহমান সরোয়ারের পক্ষে। অন্যান্য প্রার্থীরা ০.৮ শতাংশ জনসমর্থন পাচ্ছেন। আর এই নগরীর জরিপের আওতায় আসা ২৩ শতাংশ মানুষ বলছেন, ভোটের ব্যাপারে তারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। আর ১৫.৯ শতাংশ মানুষ এই জরিপকারী দলের কাছে কোনও উত্তর দিতে চাননি। নগরীর মোট ১ হাজার ২৪১ জনের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়েছে।'
জয় লিখেছেন, 'রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে ৫৮ শতাংশ ভোটার তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। এখানে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে ১৬.৪ শতাংশ ভোটার রয়েছেন। আর অন্য প্রার্থীরা সমর্থন পাচ্ছে ০.৯ শতাংশ ভোটারের। এছাড়া রাজশাহীতে ১২.৩ শতাংশ ভোটার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। আর ৯.৬ শতাংশ ভোটার এই জরিপকারী দলের কাছে তাদের মতামত জানাতে রাজি হননি। এই নগরে ১ হাজার ২৯৪ জন সম্ভাব্য ভোটারকে এই জরিপের আওতায় আনা হয়।
'সিলেটে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান নৌকা প্রতীক নিয়ে জনমতের ৩৩ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন, বিএনপি’র আরিফুল হক চৌধুরী ২৮.১ শতাংশ সমর্থন পাচ্ছেন বলেই এই জরিপকারী সংস্থাটি দেখতে পাচ্ছে। এর বাইরে অন্য প্রার্থীদের প্রতি সমর্থন রয়েছে ১.৩ শতাংশ ভোটারের। সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন ২৩.০ শতাংশ ভোটার আর জনমতে উত্তর দিতে চাননি ১২.৬ শতাংশ ভোটার। এই জরিপের আওতায় ছিল ১ হাজার ১৯৬ জন সম্ভাব্য ভোটার।'
সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘পাঁচ বছর ধরে আরডিসির মাধ্যমে আমি জনমত জরিপের কাজ করছি। তারা যে পদ্ধতি ব্যবহার করেন এবং যে ফলাফল বেরিয়ে আসে,সেসব গবেষণা থেকে তা নির্ভুল। তবে এও ঠিক, এবার যে জরিপের ফল তুলে ধরলাম, তাতে কিছুটা হেরফের হতে পারে। কারণ, এ জরিপ হয়েছে মাসজুড়ে। আর এর মধ্যে তুমুল নির্বাচনী প্রচার হয়েছে। গত রাতে সে প্রচার শেষও হয়েছে। তাই ফলাফলে কিছু হেরফের হওয়া আশ্চর্যের কিছু না। তবে আমি যথেষ্ট আস্থা নিয়ে বলতে পারি, বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় হবে। সিলেটে আমরা সামান্য এগিয়ে। তবে সেখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।'
বিএনপি হেন অভিযোগ নেই যা করেনি। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা সমস্ত জনসমর্থন হারিয়েছে। অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েছে। এখন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো নির্বাচনে বিএনপি কোনো বিষয় নয়।
‘আমি আমার দলের কর্মী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন রাখব, তাঁরা যে নির্বাচনী কেন্দ্র দখল এবং জোর করে ব্যালট পেপার ভরানোর চেষ্টার বিষয়ে সজাগ থাকেন। কেননা, এসব কাজ নিজেরাই করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করবে। গাজীপুরের নির্বাচনের সময় বিএনপির নেতাদের টেলিফোন কথোপকথনের কথা আমরা জানি। তাদের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারের সময় মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছে যে তাদের জেতার কোনো অবস্থা নেই। তাই তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করে আওয়ামী লীগকে বিপদে ফেলতে চায়’ বলেও স্ট্যাটাসে লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা।