ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনও সড়ক সুবিধাবঞ্চিত। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে বাংলাদেশে এই সুবিধার বাইরে থাকা জনসংখ্যা ১ কোটি ৫৯ লাখ। যা বিশ্বে ৪র্থ সর্বোচ্চ। তালিকার শীর্ষ তিন দেশ হচ্ছে ইথিওপিয়া, তানজানিয়া ও উগান্ডা।
বিশ্বব্যাংকের সম্প্রতি প্রকাশিত ‘অ্যাটলাস অব সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস ২০১৮ : ফ্রম ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট ইন্ডিকেটরস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। কমপক্ষে দুই কিলোমিটার পথ নৌকায় বা হেঁটে প্রধান সড়কে উঠে বিভিন্ন স্থানে ও শহরে যাতায়াত করতে হয় এমন জনগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা করেছে বিশ্বব্যাংক।
জনসংখ্যার ঘনত্ব, নগরায়ণের হার, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাত্রা ও গ্রামীণ অবকাঠামো ইনডেক্সের ভিত্তিতে এ ক্ষেত্রে সড়ক নেটওয়ার্ক যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের আটটি দেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সড়ক নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। দেশগুলোর জনসংখ্যা ৪৬ কোটি ১৭ লাখ। আর সড়ক নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে প্রায় ১৭ কোটি ৪২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ছয়টিই আফ্রিকা মহাদেশের। বাকি দুটি দক্ষিণ এশিয়ার।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সড়ক সুবিধাবঞ্চিত ইথিওপিয়ার মানুষ। দেশটির ৬কোটি ৩৭ লাখ মানুষ যাতায়াতের জন্য প্রধান সড়ক ব্যবহারের সুযোগ পায় না। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তানজানিয়া। দেশটির তিন কোটি ২৮ লাখ মানুষ সড়কের সুবিধাবঞ্চিত। তৃতীয় অবস্থানে থাকা উগান্ডার এক কোটি ৬৩ লাখ মানুষ সড়কের সুবিধাবঞ্চিত।
আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশগুলোর পর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত আরও দুই দেশ মোজাম্বিক ও কেনিয়া। দেশ দুটির যথাক্রমে এক কোটি ৫০ লাখ ও এক কোটি ৩৩ লাখ মানুষ সড়ক নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। তালিকায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে সার্কভুক্ত দেশে নেপাল। পাহাড় ঘেরা এ দেশটির ১ কোটি ৩ লাখ মানুষ এখনও সড়ক নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। আর অষ্টম অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়া। দেশটির ৬৯ লাখ মানুষ সড়ক ব্যবহারের সুবিধাবঞ্চিত।
বিশ্বব্যাংকের গত বছর প্রকাশিত ‘অ্যাটলাস অব সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীনে মোট তিন লাখ ২৫ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ৩২ শতাংশ পাকা সড়ক।
সারাদেশে সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে ২১ হাজার ৩০২ কিলোমিটার সওজের অধীন। আর বাকি তিন লাখ চার হাজার ৩৭৯ কিলোমিটার ফিডার বা গ্রামীণ সড়ক। এর মধ্যে মাত্র ৫৩ হাজার ৩১৬ কিলোমিটার ভালো অবস্থায় আছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের সবচেয়ে কম সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে খাগড়াছড়িতে। এরপর রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও সুনামগঞ্জ জেলায়। আর বর্তমানে দেশে প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে সড়কের পরিমাণ ১৯২ কিলোমিটার।