ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৮২ জন প্রাণ হারিয়েছে। রোববারের ওই ভূমিকম্পে কয়েশ মানুষ আহত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে হাজার হাজার ইমারত ভেঙে পড়েছে এবং বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ যোগাযোগ। খবর বিবিসির।
ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে রোববার রাতে ভূমিকম্প শুরু হলে পার্শ্ববর্তী দ্বীপের লোকজন আতঙ্কে বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় লম্বক দ্বীপে এক সপ্তাহ আগের আরেকটি ভূমিকম্পে ১৬ জন নিহত হন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য মতে, সর্বশেষ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও কয়েক ঘণ্টা পর তা তুলে নেয়া হয়।
পরে লম্বক এবং বালির রাস্তায় ভেঙে পড়া বাড়ি ঘরের ধ্বংসাবশেষ পরিস্কার করতে সাধারণ মানুষকে কাজে নামতে দেখা গেছে। নিরাপত্তা বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে. শানমুগাম ভূমিকম্পের সময় লম্বকে ছিলেন।
ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, যেভাবে তার হোটেল কাঁপছিল তার দাড়িয়ে থাকাটা রীতিমত অসম্ভব মনে হয়েছিল। অল্প কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও বালি এবং লম্বক দুই দ্বীপের বিমানবন্দরেই বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
লম্বক এবং বালি দ্বীপে যথাক্রমে ত্রিশ এবং চল্লিশ লাখ মানুষের বসবাস। তবে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক লাখ পর্যটক দেশটিতে ভ্রমণ করে থাকেন।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, লম্বকের প্রধান শহর মাতারামে বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের অধিকাংশই দূর্বল নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
মাতারামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শক্তিশালী ভূমিকম্পে লোকজন ভয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ইমান নামের এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যেকেই তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের বাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন।
সিটি হসপিটাল এবং বালির দেনপাসার হসপিটালের রোগীদের হাসপাতালে থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা রাস্তায়ই এসব রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন।
রিং অব ফায়ারের ওপর অবস্থিত হওয়ার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই অঞ্চলটিতে ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত দেখা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলো এই রিংয়ে রয়েছে।