ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আজ (সোমবার) সকাল থেকে রাজধানীতে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। গণপরিবহন সঙ্কটে আজও অফিস ও বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসীরা।
সোমবার (৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর সাইনবোর্ড এলাকা থেকে সাভার রুটের লাব্বাইক, সাইনবোর্ড থেকে চন্দ্রা রুটের ঠিকানা, ভুলতা থেকে কলাবাগানে মেঘলা পরিবহন, সাইনবোর্ড থেকে গাজীপুর রুটের অনাবিল, সোনারগাঁও থেকে চানখারপুল রুটের স্বদেশ পরিবহনের বাস চলাচল করছে।
এছাড়া গুলিস্তান থেকে রায়েরবাগ পর্যন্ত চলাচল করা শ্রাবণ পরিবহনের বাসও চলাচল করছে। গুলিস্তান থেকে মিরপুর রুটের ট্রান্স সিলভা, সদরঘাট থেকে টঙ্গী চলাচল করা সুপ্রভাত, যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুর রুটের শিখর, আব্দুল্লাহপুর থেকে মোহাম্মদপুর রুটের তেতুলিয়া, পল্লবী থেকে নিউ মার্কেট রুটের মিরপুর লিঙ্ক পরিবহনের বাস চলাচল করতে দেখে যায়।
তবে গাড়ির সংখ্যা যাত্রীর তুলনায় ছিল একেবারে কম। একটি বাস আসলেই সবাই দ্রুত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। হুড়োহুড়ি করে গাড়িতে ওঠতে গিয়ে অনেকে আহত হচ্ছেন। অপরদিকে বাস সঙ্কটে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রিকশা চালকদের পোয়াবারো। আজও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দাবি করছেন তারা।
গুলিস্তানে ট্রাক থেকে নেমে পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করা সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। আজ (সোমবার) তো রাস্তায় শিক্ষার্থীরা নেই, আজ কেন বাস চলছে না? এটা মগের মুল্লুকের দেশ হয়ে গেছে। মাঝখান দিয়ে ভুগছি আমরা সাধারণ মানুষ।
বাস বা অন্য যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা দিয়েছেন। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে হেঁটে গুলিস্তান এসেছেন বঙ্গবাজারের পোশাক বিক্রয়কর্মী শাহেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার বাসা দনিয়া এলাকায়। কয়েকদিন ধরে সকাল-বিকেল হেঁটে আসা-যাওয়া করছি। সরকার তো সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা ভাবে না। তা না হলে এসব ঘটনা আরও কয়েকদিন আগেই শেষ করে দিতে পারত।
গত ২৯ জুলাই (রোববার) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই ঘটনার পর থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপোরোয়া বাস চালককে ফাঁসি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এর এক পর্যায়ে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে রাজধানীতে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বাস মালিকরা।