ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মোটর সাইকেল আরোহীসহ একদল সশস্ত্র লোক মোহাম্মদপুরে মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
শনিবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতে নৈশভোজ করে বের হওয়ার সময় হামলার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের গাড়ি।
ওই সময় বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ঢিল ছোড়া হয়। পুরো ঘটনা নিয়ে তিনি ইতোমধ্যে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন।
রোববার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “মোটরসাইকেল আরোহীসহ একদল সশস্ত্র লোক শনিবার মোহাম্মদপুর এলাকায় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে বহনকারী দূতাবাসের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।”
হামলায় কারও কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “রাষ্ট্রদূত ও তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত দল অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুটি গাড়ির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।”
এই ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
মোহাম্মদপুর পুলিশ বলেছে, সুজন সম্পাদকের বাসায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার খবরটি তাদের দেওয়া হয়নি।
রাত ১১টার দিকে এই হামলা হয় বলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম বাংলাদেশ ডট নেটকে জানান।
তিনি বলেন, “রাত ১১টার দিকে উনি (বার্নিকাট) যখন বাসা থেকে বেরিয়ে উনার গাড়িতে উঠছিলেন তখন একদল লোক হামলা করে।”
বদিউল আলমের পাশের বাসার জামাল নামে এক কর্মচারী প্রথম বাংলাদেশ ডট নেটকে বলেন, “হামলাকারীরা গাড়ি আটকাতে চেয়েছিল, কিন্তু এটি দ্রুত বেরিয়ে যায়। তখন হামলাকারীরা গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে ঢিল ছোড়ে।”
ঘটনার পরপরই জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন বদিউল আলম। রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর সকালে প্রথম বাংলাদেশ ডট নেটকে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এই এলাকায় এলে তা আমাদের জানানোর কথা। কিন্তু আমাদের কিছু জানানো হয়নি।”
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারও প্রথম বাংলাদেশ ডট নেটকে বলেন, “আমাদের জানানো হলে তার নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতাম এবং সেক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা হওয়ার সুযোগ থাকত না।”
বদিউল আলম মজুমদারের করা অভিযোগটি পুলিশ সাধারণ ডায়েরি হিসাবে নিয়েছে।
ঘটনাটি হামলার এবং ভাংচুরের মামলা হল না কেন- এই প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব সরকার বলেন, “জিডির তদন্ত চলছে, প্রয়োজন হলে মামলা হবে।”
কারা হামলা চালাতে পারে, তা শনাক্ত করার জন্য ওই ভবনসহ আশেপাশের ভবনের বা সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিপ্লব সরকার বলেন, “ঘটনার যারা প্রত্যক্ষদর্শী তাদের বক্তব্যও প্রয়োজনে নেওয়া হবে।”
হামলাকারীরা এলাকার না বহিরাগত, কিছুই স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।
“এই ঘটনার সাথে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাব, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন বিপ্লব সরকার।
এদিকে বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এজন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরই দায়ী করেছেন।