DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

আমার মা ছিলেন আসল গেরিলাঃ বেগম মুজিবের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাসিনা।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, কারাবন্দি বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে যেতেন এবং তাঁর নির্দেশনা এনে ছাত্রদের বলতেন। তাঁর মা ছিলেন আসল গেরিলা।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমার ছোট ফুফুর সোবহানবাগ ফ্ল্যাটে কিছু বিহারি থাকত, তারা বোরখা পরে থাকত। চকচকে পাথরওয়ালা স্যান্ডেল পরত। সেখান থেকে শাড়ি নিয়ে আমার মা ফুফুর বাসায় শাড়ি চেঞ্জ করে, একটা স্কুটার ডেকে, বোরখা পরে যেতেন। আজিমপুর কলোনিতে আমাদের কিছু দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ছিল। তাঁদের বাসায় বা এই রকম কোনো আত্মীয়ের বাসায় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মা বৈঠক করতেন। আব্বা কারাগারে বসে যে নির্দেশনাগুলো দিতেন, স্লোগান থেকে শুরু করে সবকিছুই মা সেগুলো তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই খবরগুলো কিন্তু কোনো ইন্টেলিজেন্সের (গোয়েন্দা) লোক পায়নি। তার আরেকটি প্রমাণ পেলাম : আমি প্রথমবার যখন সরকারে আসলাম আমার একটু আগ্রহ হলো যে, আমার আব্বার বিরুদ্ধে এসবির কাছে কী কী রিপোর্ট আছে। আমি সমস্ত ফাইল নিয়ে আসলাম এবং সবগুলো ফটোকপি করলাম। সেখানে ৪৭টি ফাইল আমার আব্বার বিরুদ্ধে। অন্য অনেক বড় বড় নেতার ফাইল আমি এনে দেখেছি, তাঁদের বিরুদ্ধে একখানা ফাইলের বেশি নাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ৪৭ খানা ফাইল লেখা। তার সঙ্গে যত চিঠিপত্র যা কিছু আছে, সব ওইখানে সিজ করা। সেই ফাইল থেকেই জানতে পারলাম, আব্বার লেখা দুইখানা খাতাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আমার একটা আগ্রহ ছিল এইগুলি বের করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফাইলগুলো দেখে আমার মনে হলো যে, আমার মা যে এইভাবে গেরিলার বেশে যেতেন এবং নির্দেশনাগুলো দিতেন, সেটা এই ফাইলে কোথাও আছে কি না। কিন্তু আমি কোথাও পাইনি। আমার মা ছিলেন আসল গেরিলা। এইভাবে যে ছদ্মবেশে আন্দোলনটাকে গড়ে তুলেছেন এবং আন্দোলন কীভাবে করতে হবে, সত্যি কথা বলতে সেটা আমার মায়ের কাছেই দেখা। এখন যেমন হরতাল ডাকলে হরতাল হয়ে যায়, তখনকার দিনে হরতাল ডাকলে হরতাল সহজে হতো না। এখনকার মতো এত মিডিয়াও তখন ছিল না যে খবরটা পৌঁছাবে। সেখানে লিফলেট করে মানুষের কাছে গিয়ে বলে বোঝাতে হতো, এইভাবে করতে হতো। কিন্তু ইন্টেলিজেন্সের কোনো খাতায়ই কিন্তু আমার মায়ের বিরুদ্ধে কোনো কথা লিখতেই পারেনি। ইতিমধ্যেই আমরা এটি প্রস্তুত করে নিয়েছি। কিছুটা আমি এডিট করে দিয়েছি। কারণ আগের দিনে সব হাতে লেখা হতো বা সেগুলো আবার টাইপ করা।’

হাসিনা আরো বলেন, ‘দেখা গেছে প্রত্যেকটিরই দুইটা তিনটা করে কপি করা। প্রায় ৩০/৪০ হাজার পাতা থেকে কমিয়ে আমি প্রায় আট/নয় হাজারে নিয়ে এসেছি। প্রায় ১৪টা ভলিয়ম হবে, খুব শিগগির প্রথম ভলিয়মটা বের হবে। সমস্তটাই মোটামুটি তৈরি করে ফেলেছি, ছাপায়ও চলে গিয়েছে, আমার মুখবন্ধটাও দিয়ে দিয়েছি। কিছু নির্ঘণ্ট করা দরকার, সেগুলো আমি করে দিয়েছি। আমার মনে হয়, এই রিপোর্ট বের হলে পরে সেটা বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশ কীভাবে স্বাধীন হলো, বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম, জাতির পিতার কী অবদান, এইসব তথ্যগুলো সেখানে পাওয়া যাবে। কারণ এই একজন নেতার বিরুদ্ধে এত রিপোর্ট, এটি তো আর কারো বিরুদ্ধে নেই।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!