ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ষাট মিনিটে ১২ গোল। গড়ে প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মেয়েদের জয়ের ব্যবধান শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই ছিল দেখার। না, ১২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ১৩ নম্বর গোল করতে বাংলাদেশের মেয়েদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৮ মিনিট। শেষ দুই মিনিটে দুই গোল করে ১৪-০ ব্যবধানের বিশাল জয় নিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছে বাংলাদেশের কিশোরীরা।
বৃহস্পতিবার ভুটানের থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে এগিয়েছিল ৬-০ গোলে। শামসুন্নাহার একাই করেছেন ৫ গোল। দুটি করে গোল করেছেন তহুরা খাতুন, আনাই মগিনি ও সাজেদা খাতুন। বাকি ৩ গোল করেছেন মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমা ও আখি খাতুন।
৮ মাস আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে। দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারী কিশোরীরা। প্রথমবার এই টুর্নামেন্টে খেলতে এসে পাকিস্তানের মেয়েরা যেন চোখে সরষেফুল দেখেছেন।
৫ মিনিটে গোল উৎসব শুরু করেছেন তহুরা খাতুন। শেষ করেছেন ৯০ মিনিটে শামসুন্নাহার। মাঝে আরো ১২ বার নিজেদের জাল থেকে বল কুড়িয়েছেন পাকিস্তানের গোলরক্ষক। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা অলস সময় কাটিয়েছেন। তাইতো মাঝেমধ্যে তিনিও উপরে উঠে সতীর্থদের বল জোগানোর চেষ্টা করেছেন। হয়তো শরীরটা গরম রাখার জন্যই। থিম্পুতে রাতে যে বেশ ঠান্ডাই পড়ে!
পাকিস্তান সাফ অঞ্চলে কিশোরীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে খেলেনি। প্রথমবার এই বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট খেলতে নেমে কী নাস্তানাবুদই না হতো হলো দেশটির মেয়েদের! ৫, ১৭, ১৯, ৩১, ৩৯ ও ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ গোল করে প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকলো ৬-০ ব্যবধানে। পরের ৮ গোল এলো ৪৮, ৫০, ৫৪, ৫৭, ৫৮, ৬০, ৮৮ ও ৯০ মিনিটে।
এক সময়তো বাংলাদেশের গোল হিসেবে রাখাই দুস্কর হয়ে উঠেছিল। একটি গোলের নোট নিতে না নিতেই আরেকটা। থিম্পুর চিংলামিথাং স্টেডিয়ামের ডাগআউট থেকে মেয়েদের বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্লোগান যেন ছড়িয়ে পড়ছিল লাল-সবুজ দেশের প্রতিটি কোনে।
১২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরও সবার প্রতিক্ষা ছিল গোল বাড়ানোর। আগের ম্যাচে শ্রীলংকার জালে ভারত দিয়েছে ১২ গোল। চ্যাম্পিয়রদের তার চেয়ে বেশি না দিলে হয়? শেষ পর্যন্ত ১৪ গোলের বিশাল জয়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু করলো বাংলাদেশ।
এ ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো বাংলাদেশের কিশোরীরা। সোমবার (১৩ আগস্ট) গ্রুপের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ নেপালের বিরুদ্ধে।