DMCA.com Protection Status
title="৭

ঈদ উল আজহার আগে মুক্তি পাবেন কি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ???

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতি ঈদকে কেন্দ্র করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করে থাকে আদালত ও সরকার। সরকারের আনুকূল্য ও আদালতের বিবেচনায় খালেদা জিয়া কারামুক্ত হতে পারবেন কীনা, তা নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা–কল্পনা।

কেউ বলছেন আগামী রবিবার তিনি জামিন পেতে পারেন। প্যারোলে মুক্তি পাবেন। আবার কেউ বলছেন ঈদের আগে খালেদা জিয়ার জামিনের কোনো প্রশ্নই উঠে না। ইতোমধ্যে একটি ঈদ (ঈদুল ফিতর) কারাগারেই কাটিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

দুর্নীতি, হত্যা, নাশকতা ও মানহানির অভিযোগে দায়ের করা ৩৬টি মামলা মাথায় নিয়ে গত ছয়মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন দেশের ৩ বারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার নথি ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয় ।

জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন  বলেন, ‘ম্যাডাম ৩৬টি মামলার ৩৩টিতে জামিনে রয়েছেন। বাকি তিনটি মামলার দুটির জামিন আবেদন পাইপ লাইনে আছে। আর একটির আবেদন শুনানির জন্য রয়েছে কুমিল্লার আদালতে। আশা করছি কুমিল্লার আদালত উনাকে (খালেদা জিয়া) জামিন দিলে ঈদের আগেই কারাগার থেকে মুক্ত হতে পারবেন। সরকার চাইলে কারাগার থেকে মুক্ত হতে খালেদা জিয়ার সময় লাগবে না। তবে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া  বলেন, ‘ঈদের আগে ম্যাডামের জামিনের সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ সম্প্রতি কুমিল্লার একটি মামলায় জামিন চেয়ে আমরা আবেদন করেছিলাম। সে আবেদনটি হাইকোর্ট নট প্রেস রিজেক্ট (উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ) করেছে। আমাদেরকে কুমিল্লার আদালতে গিয়ে আবেদন করতে বলছে হাইকোর্ট। সেখানে সময় লাগবে। হাইকোর্ট খোলা থাকবে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত। এই অল্প সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার জামিনের সম্ভাবনা দেখছি না। যা হওয়ার তা ঈদের পরেই হবে।’

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন  বলেন, ‘সরকার আন্তরিক না হলে ঈদুল আজহার আগে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কারামুক্তি সম্ভব না। সরকার কূটকৌশল করে মামলাগুলোর জামিন নিয়ে বিলম্ব করছে।’

সরকার আন্তরিক হলে কতদিনের মধ্যে খালেদা জিয়া জামিন পেতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে লিওন বলেন, ‘সরকার আন্তরিক হলে আগামী রবিবার (১২ আগষ্ট) তার জামিন সম্ভব। ৩৬টি মামলার মধ্যে জামিনযোগ্য মামলা রয়েছে দুটি। আর বাকি ৩৪টি মামলা রয়েছে জামিন অযোগ্য। তবে বয়স বিবেচনায়, শারীরিক অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা ও ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আদালত ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) বেইল (জামিন) দিতে পারে।’

এদিকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত খোলা থাকবে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর অবকাশকালীন ছুটি চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। হাইকোর্টে না আসা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন সম্ভব নয় বলেও মনে করেন এই আইনজীব।

জানতে চাইলে রাষ্টপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান বলেন, ‘ঈদের আগে খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না কারণ তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে যে মামলাটি জামিনের জন্য রয়েছে। সেটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, জজ কোর্ট পার করে আসতে হবে হাইকোর্টে। এ জন্য কমপক্ষে ১০দিন সময় লাগবে। তাই ঈদের আগে কোনোভাবেই খালেদা জিয়ার জামিন বা কারামুক্তি সম্ভব না।’

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলার মধ্যে চারটি মামলা করেছে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর করা হয়েছে ৩২টি মামলা।এ মামলাগুলো ঢাকার বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত, ঢাকা জজ আদালত, কুমিল্লা ও নড়াইলের আদালতে রয়েছে।

এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আপিল হাইকোর্টে শুনানি চলছে।গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতির দায়ে ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারন খালেদা জিয়া। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!