DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

গরু বিক্রি করতে পারছেন না দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতার বাসিন্দারা

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলের বাসিন্দারা ভারতীয় গরুর কারণে নিজেদের পালিত গরু বিক্রি করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

তিন বিঘা করিডোর দিয়ে চলাফেরার অনুমতি পেলেও এর নিয়ন্ত্রণ ভারতের কাছে থাকায় তাদের আরোপ করা কিছু শর্ত মেনে চলতে হয় দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলের বাসিন্দাদের। ভারত থেকে চোরাই পথে আসা গরুর কারণে ছিটমহলের বাসিন্দারা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নিজের পালিত গরু বিক্রি করতে পারছেন না।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের আরোপিত নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ৬০টি গরু তিন বিঘা করিডোর দিয়ে পার করার নিয়ম রয়েছে। দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতাবাসীকে প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার গরু পারাপারের অনুমতি দিয়েছে বিএসএফ। ৬০টি গরু বিক্রির সিরিয়াল দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আঙ্গোরপোতা বিজিবি।

Lalmonirhat02

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রাতের আঁধারে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মিলে বিজিবি সদস্যদের ম্যানেজ করে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে এসব গরুকে বৈধতা দিয়ে সিরিয়াল দেন। ভারতীয় গরু প্রবেশের ফলে দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতাবাসী নিজের পালিত গরু বিক্রি করতে পারছে না।

দহগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল বারেক বলেন, মেম্বারের পেছনে কয়েক মাস ঘুরেও কষ্ট করে পোষা গরু বিক্রির জন্য সিরিয়াল পাওয়া যায় না। অথচ টাকা বেশি দিলেই ভারতীয় গরুর সিরিয়াল পাওয়া যায়।

দহগ্রাম নতুন বাজার এলাকার ফাতেমা বেগম বলেন, আমার স্বামী তহিদুল খুবই অসুস্থ্য। গরু বিক্রি করে চিকিৎসা তার করার কথা। কিন্তু বেশ কয়েকরার মেম্বার-চেয়ারম্যানের হাত ধরেও একটি গরুর সিরিয়াল পাইনি। চিকিৎসার অভাবে কি আমার স্বামী মরবে?

ওই এলাকার কৃষক ওমর ফারুক বলেন, মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা প্রতিটি ভারতীয় গরুর সিরিয়াল ১০ থেকে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। আর এই ঈদে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছেন তারা।

দহগ্রাম ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ মো. মাজেদুল হক জানান, গত বুধবার দহগ্রাম গুচ্ছগ্রাম বাজারে ভারতীয় গরু দেখে শতশত মানুষ রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ করেছে।

Lalmonirhat03

তিনি বলেন, ভারতীয় গরু আর দহগ্রামে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এখন থেকে চেয়ারম্যানকে স্থানীয় গরুর সিলিয়াল দিতে হবে।

আঙ্গোরপোতা ৬১ বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার বেলায়েত হোসেন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিবন্ধন করা গরুর তালিকা ও খাতা দেখে গরু বিক্রির অনুমতি দিয়ে থাকি। ভারতীয় গরু প্রবেশের সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভারতীয় কোনো গরু দহগ্রামে প্রবেশ করে না। কোনো গরুর সিরিয়াল টাকায় বিক্রিও হয় না। এক বিজিবি সদস্যের মৃত্যুর পর থেকে ভারতীয় কোনো গরু দহগ্রামে প্রবেশ করে না।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূর কুতুবুল আলম বলেন, দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতাবাসী গরু বিক্রি করতে পারছে না এমন অভিযোগ পাইনি । অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!