ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ খুনের এক মাস পর অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলা নিল কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
নিহত যুবলীগ নেতা আজাদ শেখের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দিলুর দায়ের করা অভিযোগটি শুক্রবার রাতে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।
মামলায় ধর্মমন্ত্রীর ছেলে ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার বিবরণে স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দিলু অভিযোগ করেন, মোহিত উর রহমান শান্ত, মন্তু বাবু ও রাসেল পাঠান আমার স্বামী সাজ্জাদ আলম আজাদ শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এরপর মোহিত উর রহমান শান্ত আমার স্বামীকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে বলে, তোকে হত্যা না করে আমি ময়মনসিংহে আসব না এবং তোর বুক থেকে কলিজাটা বের করে দেখব। পরে ৩১ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে তাদের নির্দেশে আসামিরা পিস্তল, কাটা বন্দুক, চাপাতি, রামদা ও হকিস্টিকসহ নানা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে এবং আমার স্বামীকে গালিগালাজ করতে থাকে।
এ সময় আজাদ শেখ প্রাণরক্ষার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নাজিরবাড়ি মসজিদের কাছে পৌঁছালে মিলন ও নুরুল পিস্তল দিয়ে গুলি করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় জুবলি কোয়ার্টার বিহারি ক্যাম্পের উল্টো দিকে গলির ভেতরে নিয়ে ফরিদ, হাকিম, সাত্তার, আব্দুল কাদের, রাজিব, রকি, ফজলু, রতন, শ্রাবণ ও মেহেদির সহযোগিতায় মিলন তার গলা কেটে তাকে হত্যা করে।
এরপর আসামি নুরুল, রানা ও ফরহাদ আমার স্বামীর বুকে চাপাতি ও ডেগার চালিয়ে তার কলিজা ও ফুসফুস বের করে নিয়ে যায়।
ঘটনার দুইদিন পর ২ আগস্ট কোতোয়ালি মডেল থানায় স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দিলু ধর্মমন্ত্রীর ছেলে ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দাখিল করে।
কিন্তু অভিযোগটি এজাহারভুক্ত না হওয়ায় নিহত আজাদ শেখের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দিলুর পক্ষে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী আফিল উদ্দিন। ৩০ আগস্ট হাইকোর্ট আজাদ শেখ হত্যার অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রীর ছেলে ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত বলেন, আমাকে ও আমার বাবাসহ আমাদের রাজনৈতিক পরিবারকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই একটি বিশেষ মহলের ইন্ধন ও নির্দেশে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাটি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বাদীর অভিযোগ সম্পর্কে জটিলতা থাকায় এজাহারটি তদন্তাধীন ছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার রাতে এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।