DMCA.com Protection Status
title="৭

নতুন ভয় ‘কিলার রোবট’

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসে অগ্রগতির হাত ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচালিত অস্ত্র ব্যবস্থারেও উন্নয়ন ঘটছে। এখন শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে-মানব মস্তিষ্কের মতো সেগুলো কৃত্রিম স্নায়ুবিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা সঞ্চিত করে। একে কাজে লাগানো হচ্ছে অস্ত্র শিল্পে। আরও দ্রুত গতির ও কাযর্কর অস্ত্র তৈরি হচ্ছে।

স্বচালিত অস্ত্রকে কীভাবে মানুষ হত্যায় কাজে লাগানো হতে পারে, তা তুলে ধরা হয়েছে ‘স্লটারবোট’ শিরোনামের একটি ফিকশনাল ফিল্মে। এর একটি ক্লিপ ইউটিউবে শেয়ার করেছেন এ ধরনের অস্ত্রের বিরোধিতাকারীরা।

এতে দেখা যায়, একটি লেকচার হলে খুব ছোট ছোট ড্রোন ভো ভো করে ঘুরছে এবং সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের মাথায় গুলি করছে। অতি ক্ষুদ্র এসব ড্রোন অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ‘টার্গেট’ শনাক্ত করে। একবার কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার জন্য প্রস্তুত হলে সে আর পালাতে পারে না। ড্রোনগুলো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং তথ্য বিনিময় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই ফিকশনে শুধু নির্দিষ্ট একটি ভিডিও শেয়ার করা ব্যক্তিদেরই হত্যা করে তারা।

২০১৭ সালের নভেম্বরে ইউটিউবে পোস্ট করার পর ক্লিপটি ২৫ লাখ বার দেখা হয়েছে। তাই একে কেবল বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনী হিসেবে মানতে নারাজ স্বচালিত বা স্বয়ক্রিয় অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে প্রচার চালানো টমাস কুচেনমাইস্টার।

তার মতে, এটা বাস্তবে হওয়া থেকে মাত্র ‘এক ধাপ দূরে’।

জার্মান সংস্থা ‘ফেসিং ফাইন্যান্স’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুচেনমাইস্টার। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত ‘স্টপ কিলার রোবটস’ ক্যাম্পেইনের উদ্যোক্তাদের অন্যতম সংস্থাটি।

তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় স্বনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র এরইমধ্যে চলে এসেছে। যেমন, স্বাধীনভাবে সম্ভাব্য টার্গেট শনাক্তকারী রকেট তৈরি হয়েছে। কাকে বা কী ধ্বংস করতে হবে, সে সিদ্ধান্তও তারা নিজেরাই নিয়ে থাকে। সেগুলো এখনো দৃশ্যত মানুষের হাতে পরিচালিত হলেও গুলিবর্ষণের আদেশ কোনো সৈনিক দিতে পারেন না। এমনকি কেউ সেটাকে আটকাতেও পারে না। ভবিষ্যতের যুদ্ধে মানুষের জীবন-মৃত্যুর সিদ্ধান্ত চলে যেতে পারে যন্ত্রের হাতে।

নিজের মতো করে ‘টার্গেট' ঠিক এবং শনাক্ত করে মানুষ হত্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। এসব অস্ত্র তৈরিতে নিষেধাজ্ঞায় দেশগুলোকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে জাতিসংঘ।

এখন পর্যন্ত ২৬টি দেশ স্বচালিত অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের এই অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছে সিভিল সোসাইটি। স্বচালিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে অ্যামেরিকান ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউটের তৈরি করা একটি পিটিশনে ২৩০টির বেশি সংস্থা এবং তিন হাজারের বেশি ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে টেসলা বস এলন মাস্ক এবং গুগলের দ্বীপ মাইন্ডের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তা ও গবেষকরা রয়েছেন।

স্বাক্ষরদাতারা প্রাণঘাতী স্বচালিত অস্ত্রের বিকাশে সহায়তা করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাশাপাশি এসব অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ‘কঠোর আন্তর্জাতিক আইনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে সামরিক কর্মকাণ্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে বিপুল অর্থ বিনিয়োগকারী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো স্বচালিত অস্ত্রের ওপর নিষধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!