ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি দেশদ্রোহী অসভ্য বাহিনী -শেখ হাসিনা । ৩রা মে ১৯৮৪-এর এক পড়ন্ত বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে গল্প করছেন শেখ হাসিনা সহ কয়েকজন গল্পে গল্পে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গ উঠলো সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কথা । শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বললেন,এটা একটা সেনাবাহিনী হলো ?এটা একটা বর্বর, নরপিচাশ, উচ্ছৃঙ্খল,লোভী,বেয়াদব বাহিনী । এই বাহিনীর আনুগত্য নেই ,শৃংখলা নেই ,মানবিকতা নেই ,মান্যগন্য নেই,নেই দেশপ্রেম । এটা একটা দেশদ্রোহী হায়েনার বাহিনী । তোমরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কথা বলো । সারা বিশ্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো এতো ভদ্র ,নম্র,সত্য বিনয়ী এবং আনুগত্যশীল খুঁজে পাওয়া যাবেনা । কি অসম্ভব সভ্য আর নম্র তারা ।
২৫ শে মার্চ রাতে তারা (পাকিস্তানী আর্মী)এসে আব্বাকে (শেখ মুজিব)স্যালুট করল ,আম্মাকে ও স্যালুট করল আমাকেও স্যালুট করল । এবং তারা বলল স্যার আমরা এসেছি শুধু আপনাদের নিরাপত্তার জন্য । অন্য কোনো কিছুর জন্য নয় । আপনারা যখন খুশি যেখানে খুশি যেতে পারবেন । যে কেউ আপনার এখানে আসতে পারবে আমরা শুধু আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো । কেউ আপনাদের এখানে এলে আমরা তাকে ভালো ভাবে তল্লাশী করে ঢুকতে দেব । এই সবই করা হবে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য । সত্যিই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যা করেছে তা সম্পূর্ণ আমাদের নিরাপত্তার জন্য করেছে ।
২৬শে মার্চ দুপুরে যখন পাকিস্তানী আর্মী আব্বাকে নিয়ে যায় তখন জেনারেল টিক্কা খাঁন নিজে আব্বাকে ও মাকে স্যালুট দিয়ে আদবের সাথে দাড়িয়ে বিনয়ের সাথে আব্বাকে বলে স্যার আপনাকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খাঁন আলোচনার জন্য নিয়ে যেতে বলেছেন,এবং এজন্যই আমরা আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি এবং উড্ডয়নের জন্য বিশেষ বিমান ও প্রস্তুত রেখে এসেছি । আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে । আপনি তৈরী হন । এরপর তারা আব্বাকে এ ও বলল যে আপনি ইচ্ছা করলে (শেখ মুজিব) ম্যাডাম (বেগম মুজিব)যে কাউকে সঙ্গে নিয়ে নিতে পারেন । আব্বা মা’র সঙ্গে আলোচনা করে একাই গেলেন । শুধু তাই নয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রসংশা করে শেষ করা যাবে না ।আমার দাদীর সামান্য জ্বর হয়েছিল,পাকিস্তানীরা হেলিকপ্টারে করে এনে ঢাকা পি,জি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছিলো । জয় (শেখ হাসিনার ছেলে) তখন পেটে,আমাকে প্রতি সপ্তাহে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে)নিয়ে চেক্আপ করাতো,এবং তারা জয়ের জন্মের এক মাস আগে থেকেই সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করিয়াছে । ১৯৭১ সালে জয়ের জন্ম হওয়ার পর পাকিস্তান আর্মীরা খুশিতে মিষ্টি ভাটোয়ারা করেছে । এবং জয় জন্ম হওয়ার সমস্ত খরচ পাকিস্তানীরাই বহন করেছে । আমরা যেখানে খুশি যেতাম ,পাকিস্তানী আর্মীরা দুই জীপ করে আমাদের সাথে যেত এবং নিরাপত্তার জন্য পাহারা দিত ।
আর বাংলাদেশের আর্মীরা জানোয়ারের দল,অমানুষের দল । এই অমানুষ জানোয়ারেরা আমার মা-বাবা,ভাই সবাইকে মেরেছে-এদের যেন ধ্বংস হয় ।
জাহানারা ইমামের মৃত্যুতে শেখ হাসিনার উল্লাস নৃত্য!
বেটি মরেছে , আপদ গেছে। লেখক মতিউর রহমান রেন্টুঁ’র-“আমার ফাঁসি চাই” গ্রন্থের কিছু অংশ- ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি টেলিফোনে শেখ হাসিনাকে জাহানারা ইমামের মৃত্যুর খবরটি জানান। জাহানারা ইমামের মৃত্যুর খবর পেয়েই শেখ হাসিনা আনন্দে নাচতে থাকেন আর বলতে থাকেন মিষ্টি খাও, মিষ্টি। আমার একটা প্রতিদ্বন্দ্বী দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছে। আল্লাহ্ বাঁচাইছে। নেত্রী হতে চেয়ে ছিলো। আমার জায়গা দখল করতে চেয়ে ছিলো। জাহানারা ইমাম মরেছে আপদ গেছে। বাঁচা গেছে। আমার জায়গা দখল করতে চেয়ে ছিলো। তোমরা জানো না, ভারতের গোয়েন্দা এজেন্সি ‘র’ আমার পরিবর্তে জাহানারা ইমামকে নেতৃত্বে বসাতে চেয়ে ছিলো। বেটি মরছে, মিষ্টি খাও। ফকিরকে পয়সা দাও।
এর কয়েক দিন পরে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের লাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এলে জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, চলো এয়ারপোর্টে যাই। আপদের লাশটা এনে কবরে ফেলি।
এরপর জননেত্রী শেখ হাসিনা লাল রঙের নিশান পেট্রোল জিপে চড়ে বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। যেতে যেতে বলতে লাগলেন, বেটি ( জাহানারা ইমাম) আমারে অসম্ভব জালাইছে। ওর মুখও দেখতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু না যেয়ে তো উপায় নেই। পলিটিক্সের ব্যবসায় ইচ্ছে না থাকলেও করতে হয়। (১২২ ও ১২৩ পৃষ্টা)।
১৯৯৬ সালে জামায়েত এর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তখন যুদ্ধ অপরাধী, রাজাকার, জঙ্গি এই সব প্রসঙ্গে কোন কথায ছিলনা তার (শেখ হাসিনা)-র মুখে।
শেখ হাসিনার প্রথম নির্দেশ মেরে ফেলো, মেরে লাশ ফেলে দাওঃ
আওয়ামী লীগের কোনো নেতা কর্মী কিংবা সমর্থক কথা প্রসঙ্গে যদি বলে প্রশাসনের কিংবা অন্য রাজনৈতিক দলের অমুক আমাদের বিপক্ষের তবে সাথে সাথে শেখ হাসিনা আদেশ দিতেন এবং নির্দেশ করতেন,তা হলে মেরে ফেলো । মেরে ফেলে দাও আমি হুকুম দিলাম । যদি কোন কারণে উক্ত ব্যক্তিকে মেরে ফেলা না যায় ,তা হলে বলতেন ঘুষ দাও,টাকা দাও’লোভ দেখাও,দেখিয়ে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসো ।
১৯৯৫ সালে মাওয়া রোড দিয়ে টুংগীপাড়া যাওয়ার সময় ফেরিতে ৩০/৪০ বছর আগে দেশ থেকে যুক্তরাজ্য চলে যাওয়া,যুক্তরাজ্যের নাগরিক শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত শিল্প ঋণ সংস্হার পরিচালক প্রফেসর আবুল হাসেম তার নিজ থানা নবাবগন্জ সম্পর্কে বললেন নবাবগন্জ ঢাকা জেলার আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী দেওয়া না দেওয়া সমান কথা । নবাবগন্জের মানুষ আওয়ামীলীগ কে পছন্দ করে না । ভোট ও দেয় না।
এ কথা শুনে শেখ হাসিনা বললেন রাতের অন্ধকারে ঘরে ঘরে আগুন লাগিয়ে দিন । আগুন লাগিয়ে ওদের পুড়িয়ে মেরে ফেলুন।
লাশের রাজনীতি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান করেন না তার বড় প্রমাণ আমি (লেখক) নিজেই। যদি তারা লাশের রাজনীতি করতো তাহলে ২০০০ সালে “আমার ফাঁসি চাই”- এর লেখক মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান রেন্টুকে শেখ হাসিনা যখন হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল তখনই বিএনপি তাকে (মতিউর রহমান রেন্টুকে ) মেরে শেখ হাসিনার উপর দোষ চাপিয়ে দিতে পারতো চোখ বন্ধ করে।
তথ্য সূত্রঃ 'আমার ফাসি চাই', লেখকঃমুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান রেন্টু।