খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতারণা বন্ধে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেলসহ বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে খুদে বার্তায় পাঠানো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্যও তাগিদ দেয়া হয়েছে। রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ময়মনসিংহের মো. খাইরুল হাসান সরকার ও রাসেল হোসেন এবং মানবাধিকার সংগঠন ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’ এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব এই নোটিশ পাঠান।
আগামী দুই দিনের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসি, গ্রামীণফোন লিমিটেড, রবি এক্সিটা লিমিটেড, এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলালিংক লিমিটেড ও টেলিটককে এই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর পল্লব জানান, পাঠানো নোটিশের জবাব আগামী দুই দিনের মধ্যে না দিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে।
নোটিশে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বেআইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে হয়রানি করে থাকে। যা প্রকারান্তরে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। গ্রাহকদের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা নির্দিষ্ট মেয়াদের পর রোল ওভার না করা বা পরবর্তী ইন্টারনেট প্যাকেজের সঙ্গে যোগ না করা, সকল খুদে বার্তা বাংলা ভাষায় প্রেরণ, সকল অফারের সঙ্গে বিস্তারিত শর্তাবলি প্রেরণ এবং গ্রাহকের সম্মতি ব্যতীত কোনো প্যাকেজ বা অফার চালু না করা, তরুণ সমাজের জন্য ক্ষতিকর সীমিত সময়ের ইন্টারনেট প্যাকেজ অফার না করা, গ্রাহকদের মোবাইলে অনবরত বাণিজ্যিক খুদে বার্তা না পাঠানো, গ্রাহকদের মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য বাণিজ্যিক কোম্পানির কাছে হস্তান্তর না করা, প্রতারণামূলক রিচার্জ অঙ্ক যেমন ১৯, ৩৯, ৪৯, ২১, ১১ ইত্যাদি সংখ্যার মাধ্যমে কোনো প্যাকেজ নির্ধারণ না করা, বাণিজ্যিক ভিক্তিতে ২৮২৮, ২০০০, ২০০৮, ২৩২৩ জাতীয় নম্বর হতে গ্রাহককে কোম্পানির মাধ্যমে ফোন দিয়ে বিরক্ত না করা।
সেইসঙ্গে ২৬ পয়সায় কেনা ১ জিবি ইন্টারনেট গ্রাহকদের কাছে ২০০ টাকার বেশি মূল্যে বিক্রি করা, বোনাস ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কোম্পানিগুলোর সার্ভার দুর্বল করে রেখে এমবি/জিবি কেটে নেয়া, ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ‘এনআইডি’ কার্ডের ব্যবহার ও পর্নোগ্রাফিসহ অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত সাইটগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মোবাইল কোম্পানি- গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক, টেলিটক, আইন মন্ত্রণালয়ের, সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেসন্স রেগুলেটরি অথরিটি (বিটিআরসি) কে বিবাদী করে নোটিশটি পাঠানো হয়।
১০টি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সকল নোটিশ প্রাপকগণকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় অচিরেই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে জনস্বার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ব্যারিস্টার পল্লব বলেন, মোবাইল ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু সেবা প্রদানকারী মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো প্রকৃত সেবার পরিবর্তে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত জীবনকে বিভিন্নভাবে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ঘনঘন অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রত্যাশিত ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি প্রচার এবং কেম্পানিগুলোর চটকদার ও লোভনীয় অফার ও শর্তাবলির বেড়াজালে গ্রাহকরা প্রতারিত হচ্ছে যা গ্রাহকদের মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।