ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মুসলিম বিশ্বের অন্যতম নেতা তুরস্কের জাতীয়তাবাদী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন না দিয়ে তার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের জন্য যারা হুমকি এবং কেউ যদি কোন অন্যায় করে থাকে তবে তাকে কারাগারে রাখা যেতে পারে। কিন্তু আমি এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি, আমার জানা মতে খালেদা জিয়া জামিন না পাওয়ার মতো কোন অন্যায় করেননি। সুতরাং তার জামিন পাওয়াটা ন্যায্য অধিকার।
তুরস্কের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘ডেইলি সাবাহ’ নিজেদের এক প্রতিবেদনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বরাতে এই খবর জানায়।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলার বিষয় আমি খোঁজখবর নিয়েছি। তাতে বুঝা যায় অরফানেজ ট্রাস্ট কিংবা চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। তাহলে কোন অন্যায় না করেও একজন ব্যক্তি কেন কারাগারে থাকবেন? এটা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
পৃথিবীর যেকোন আদালতকে সকল প্রকার অনুরাগ কিংবা বিরাগের উর্ধ্বে উঠে ন্যায়বিচারের দণ্ড সুউচ্চ অবস্থানে রাখার আহ্বান জানান এরদোগান। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সমতা বজায় রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশে ‘ইসলামের বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে শিগগিরই তিনি জামিন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এরদোগান। এছাড়া খালেদা জিয়ার জন্য যেকোন সহায়তা করতে তুরস্ক প্রস্তুত বলেও তিনি জানান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। তার ছেলে তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই সাথে খালেদা, তারেকসহ সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা জরিমানা করা হয়।
এসময় আদালত থেকেই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
৮ মার্চ সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন একই হাইকোর্টে বেঞ্চে গিয়ে জামিন বিষয়টি আদালতের নজরে এনে বলেন, ‘এই মামলার নথি আসার জন্য দেয়া সময় তো শেষ।’
এসময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন।তবে অদ্যাবধি তার জামিন হয়নি।