ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা জানাতে শুকরানা মাহফিলে আসেননি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সহ-সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। এছাড়াও বেশ কয়েকজন কওমী হেফাজত নেতা শুকরানা মাহফিলে অংশগ্রহন করেননি।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তরের স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ (হাইয়াতুল উলয়া) শুকরানা মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রোববার সকালে হাইয়াতুল উলয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কওমিপন্থী আলেম-ওলামারা যখন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন, তখন আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরী ছিলেন তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বাবুনগর গ্রামে।
শুকরানা মাহফিল উপলক্ষে কওমিপন্থী আলেম-ওলামা তৈরির আঁতুড়ঘর হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় তিনি তার গ্রামের বাড়িতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী শুকরানা মাহফিলে যাচ্ছেন কিনা জানতে গত শনিবার সন্ধ্যায় স্বশরীরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় গেলে কথা হয় । এ সময় বাবুনগরী বলেন, আমার শরীর ভালো নয়। তাই শুকরানা মাহফিলে যেতে পারছি না।
তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী জানান, সম্প্রতি শুকরানা মাহফিল নিয়ে সৃষ্ট হেফাজতের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হয়তো তিনি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাননি। অথচ হুজুর (জুনায়েদ বাবুনগরী) শারীরিকভাবে আগের চাইতে অনেকটা সুস্থ। ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, হেফাজতের মহাসচিব ও বেফাকের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত তার অজান্তেই হয়।
তিনি সরকার বিরোধী অবস্থানের কারণে নানা সমস্যায় পড়ছেন। ভারতে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকার তার পাসপোর্ট আটকে রেখেছে। ফলে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। এছাড়া হুজুরের বিরুদ্ধে অনেক মামলা করা হয়েছিল। সেগুলো তুলে নেয়া হয়নি।
এদিকে শুকরানা মাহফিল নিয়ে সৃষ্ট হেফাজতের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হেফাজত নেতৃত্বের বড় একটা অংশ অনুপস্থিত ছিল।
এদের মধ্যে কিছুদিন আগে পদত্যাগ করা সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমির মহিববুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, নায়েবে আমির ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আল্লামা হাফেজ তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমির তফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, আল্লামা সুলতান জওক নদভী, আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, আল্লামা আব্দুল মালেক হালিম, মুফতি ইজহারুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী শুকরানা মাহফিলে অংশগ্রহণ করেননি বলে একটি সূত্র যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে।