ক্যাপ্টেন(অব)মারুফ রাজুঃ বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কথামতো প্রশাসন ও পুলিশে কোনো রকম রদবদল না করতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।
শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ১৪ দলের প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।
এর আগে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসির সঙ্গে বৈঠক করেন।
পরে দিলীপ বড়ুয়া বলেন, এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের চেষ্টা করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবার প্রতিদিন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মনগড়া ও বানোয়াট অভিযোগ করে তাদের মনোবল ভেঙে দেয়ার অপচেষ্টা করছে; যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারে। আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, প্রশাসনের রদবদল করা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিএনপির কথামতো যেন এ ধরনের রদবদল করা না হয়, এ বিষয়টি আমরা কমিশনকে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বক্তব্য রাখছে অথচ ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন একজন আইনজ্ঞ হয়েও এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না। বিএনপি যে দাবিগুলো উত্থাপন করছে সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তারা তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কোন ধরনের নির্যাতন না হয় এবং নির্বাচনে তারা যেন নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে নির্বাচনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন তিনি।
জোটের অপর নেতা জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। বিরোধী রাজনৈতিক জোটগুলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। এ ব্যাপারে কমিশনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছি।
বৈঠকে ইসিকে একটি চিঠি দেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা।
এতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বানচালের অংশ হিসেবেই প্রতিদিন অসত্য ও মনগড়া অভিযোগ ইসিতে নিয়ে আসছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল ও জোটকে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য কর্তব্য। অথচ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একজন দণ্ডিত ও পলাতক আসামি হওয়ার পরও তিনি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত কোন আসামি জাতীয় সংসদের সদস্য পদ প্রার্থীদের বাছাই করতে পারেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংবিধানের প্রতি চরম অবমাননা এবং রাষ্ট্রীয় বিধিবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। তারেক রহমানের এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসির প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।