ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নরসিংদীর শিবপুরে চুরির প্রতিবাদ করায় নাজমা বেগম (৩৬) নামে এক গৃহবধূর এক চোখ তুলে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার সৈয়দনগর দড়িপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে গৃহবধূর বাবা আব্বাস আলী বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নাজমা বেগম সৈয়দনগর দড়িপাড়া এলাকার মতিন মিয়ার স্ত্রী।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার এলাকার মাহফুজ মিয়া ও তার ভাই মোরশেদ মিয়া, লুৎফর রহমান, সুজন মিয়া, শরীফ আহমেদ, ইমন ও হৃদয় নাজমা বেগমের একটি ছাগল চুরি করে। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনার জানাজানি হলে নাজমা বেগমের এক আত্মীয় অভিযুক্ত হৃদয় মিয়াকে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিনই রাত আটটার দিকে অভিযুক্তরা ইটাখোলা এলাকায় নাজমা বেগমের আত্মীয় সজিব মিয়ার গতিরোধ করে। এসময় অভিযুক্তরা সজিবকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন। তার আত্মচিৎকারে নাজমা বেগম এগিয়ে আসেন। এ সময় অভিযুক্ত মোরশেদ মিয়া ছুরি দিয়ে নাজমা বেগমের বাম চোখে আঘাত করে। এতে চোখ বেরিয়ে আসে। পরে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে নাজমা বেগমকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরবর্তীতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নেয়া হয়।
এ সময় আহত নাজমা বেগম বলেন, তারা আমার ছাগল চুরি করে খেয়ে ফেলেছে। এর প্রতিবাদ করায় আমার আত্মীয়কে মারধর করে এবং আমার চোখ উপড়ে ফেলে।
গৃহবধূর স্বামী মতিন মিয়া বলেন, এই সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে। তারা এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। তাই তাদের কোনো অপরাধের বিচার হয় না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে উল্টো তাকেই হয়রানি হতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাশার খান বলেন, অতন্ত নৃশংস ও বর্বরতম একটি ঘটনা। এর ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছাগল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারি হয়েছে। ওই ঘটনায় নাজমা আক্তারের চোখে জখম হয়েছে। এ ঘটনায় ভোক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।