ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবৈধ হাসিনা সরকারের কারসাজিতে ঢাকা–৯ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাসের অভিযোগ, তাঁর লোকজন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মনোনয়নপত্র নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, মির্জা আব্বাসের লোকজন বিকেল পাঁচটার পরে এসেছেন, এ কারণে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়নি।
তবে বিকেল পাঁচটার পরও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা নিতে দেখা গেছে। সর্বশেষ সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় জাতীয় পার্টির এক মনোনয়নপ্রত্যাশী তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা মহানগরের আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকা–৮ আসন থেকে মির্জা আব্বাস রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস গতকাল ঢাকা–৯ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেন। গতকাল মির্জা আব্বাস ঢাকা–৯ আসন থেকেও মনোনয়নপত্র জমা দিতে লোকজন পাঠান। তবে সময় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে মনোনয়নপত্র জমা হয়নি।
গতকাল দিনভর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এক ব্যক্তি ঢাকা–৯ আসনে মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। তখন এই আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করা প্রস্তাবক বা সমর্থক যেকোনো একজনকে উপস্থিত থাকতে হবে বলে জানান। তখন ওই ব্যক্তি চেয়ার থেকে উঠে মুঠোফোনে কল করে প্রস্তাবক বা সমর্থকদের আসতে বলেন। সে সময় তিনি মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্রটি কর্মকর্তাকে সংরক্ষণ করার অনুরোধ করেন। কর্মকর্তা জানান, অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র জমা রাখা সম্ভব না। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এর খানিক পরই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মির্জা আব্বাসের কয়েকজন লোক এসে জড়ো হন। তাঁরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত কাগজপত্র গুছিয়ে জমা দিতে গেলে ওই কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে। এরপর মির্জা আব্বাসের লোকজন তাঁকে অনেক অনুরোধ করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের অপেক্ষা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্রটি আর জমা নেওয়া হয়নি।
মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্রের সমর্থক খন্দকার সিকান্দার কাদের বলেন, ‘আমরা নাকি পরে গেছি তাই জমা নেয়নি। যদি ভিডিও ফুটেজ দেখা হয়, তাহলে আমরা কখন প্রবেশ করেছি কখন বের হয়েছি তা দেখা যাবে। আমাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে আর জমা নেয়নি।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আশ্চর্য হয়ে গেলাম! আমারটা যখন দেখল তখন তারা নিল না।’ তিনি বলেন, ‘চারদিক থেকে একটা অত্যাচার শুরু হয়েছে। পুলিশ দিয়ে হয়রানি, কোর্ট দিয়ে হয়রানি, বাড়ির মধ্যেও হয়রানি। গতকাল (মঙ্গলবার) আমার বাড়ির সামনে থেকে ১৮ জনকে ধরে নিয়ে গেছে। আজ (গতকাল) দুজনকে নিয়ে গেছে। বাসার সামনে পুলিশ ঘুরঘুর করছে। আমরা কী করব?’
এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের ঢাকা–৯ আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত থানা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র নিয়ে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে এসেছে, তাই নেওয়া হয়নি। কারণ, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় পূর্বনির্ধারিত ছিল।