DMCA.com Protection Status
title="৭

আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আধিপত্যের প্রশ্নে এবার ফুঁসে উঠল চীন। হুমকি দিয়ে বুঝিয়ে দিলো, আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তত। দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য, বাণিজ্য-যুদ্ধ ও তাইওয়ানের স্বাধীনতার প্রশ্নে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ক্রমেই সঙ্ঘাত তুঙ্গে উঠছে বেইজিংয়ের। এই অবস্থায় রীতিমতো যুদ্ধের হুমকি দিয়ে দিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনা সশস্ত্র বাহিনীকে তার নির্দেশ, যুদ্ধের প্রস্তুতি সেরে রাখতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় যা কিছু করার, তার সবটাই করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে তৈরি থাকতে হবে। চীনা সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করলেন জিনপিং।

যুদ্ধের প্রস্তুতির পাশাপাশি যুদ্ধাস্ত্রের ভাণ্ডারেও শক্তিবৃদ্ধি করছে চীন। আমেরিকাকে টেক্কা দিতে তৈরি করে ফেলেছে এক ‘দানব বোমা’। মার্কিন বাহিনীর হাতে থাকা ‘মাদার অব অল বম্বস’-এর পাল্টা হিসেবে এই বিশাল বোমা তৈরি করেছে তারা। যার শক্তি ও ধ্বংসলীলা চালানোর ক্ষমতা পরমাণু অস্ত্রের কাছাকাছি। এই দানবাকার বোমাকে আমেরিকার ‘মাদার অব অল বম্বস’-এর চীনা সংস্করণ বলা হচ্ছে। বোমাটির ধ্বংসাত্বক ক্ষমতা কতটা, তার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে সেদেশের প্রতিরক্ষা সংস্থা নোরিনকোর ওয়েবসাইটে। এইচ-৬কে বোমারু বিমান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সেটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। এই ভয়াবহ বোমার আত্মপ্রকাশের মধ্যেই আমেরিকাকে সমঝে দিতে সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিলেন জিনপিং। আমেরিকার সঙ্গে প্রকাশ্য সঙ্ঘাতের প্রেক্ষিতে চীনা প্রেসিডেন্ট যেভাবে যুদ্ধের মেজাজে, তা নিয়ে পৃথিবীজোড়া জল্পনা ও চর্চা শুরু হয়ে গেছে। তাহলে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগচ্ছে পৃথিবী, আতঙ্কের দোলাচলে চর্চা তুঙ্গে!

 

আঞ্চলিক আধিপত্যের প্রশ্নে ক’দিন আগেই মাত্রাতিরিক্ত আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল চীনের প্রেসিডেন্টকে। বুধবার তার মন্তব্য ছিল, তাইওয়ানের ‘সংযুক্তিকরণে’র জন্য এবং এই দ্বীপভূমির স্বাধীনতা ঠেকাতে সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহারের অধিকার চীনের আজও রয়েছে।

জিনপিংয়ের এই মন্তব্যের নেপথ্যে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক একটি পদক্ষেপ। তাইওয়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘এশিয়া রিঅ্যাসিওর‌্যান্স ইনিশিয়েটিভ’ আইনে স্বাক্ষর করেন তিনি। আমেরিকার পক্ষ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে চীনের প্রতি পাল্টা সুর চড়ান তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টও। তিনি বলেন, জীবনধারণ ও গণতন্ত্র রক্ষার অধিকার তাইওয়ানের রয়েছে। কাজেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল ক’দিন আগে থেকেই।

বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং যে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়াতে চাইছে, সেই ইঙ্গিতও আসতে শুরু করেছিল। এই অবস্থায় চাপে পড়ে শুক্রবার চীনা সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জিনপিং। দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যানও তিনি। অর্থাৎ চীনের ‘রেড আর্মি’র সর্বেসর্বা। শীর্ষ সামরিক কর্তাদের সঙ্গে এই বৈঠকেই চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মিকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং। চীনা প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, দেশকে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পরিবর্তিত সময়ের কথা মাথায় রেখে নতুন নতুন কৌশলের উদ্ভাবন করতে হবে সশস্ত্র বাহিনীকে। যুদ্ধে ঝাঁপানো ও তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির দায়িত্ব নিতে হবে সেনাবাহিনীকে। বর্তমানে বড় ধরনের একঝাঁক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পৃথিবী। গত এক শতাব্দীতে যা দেখা যায়নি। তাই যুদ্ধের জন্য নতুন ধরনের বাহিনী গড়ে তোলাও আবশ্যক।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!