DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ঢাবি ছাত্রী অপহরণের চেষ্টা

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা থানার সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী সিথি কিবরিয়াকে অপহরণ চেষ্টা ও হেনস্তা করার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। এ সময় জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২ জানুয়ারি লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার দোয়ানী তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তফিউজ্জামান জুয়েলসহ সাত-আটজন ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সিথি কিবরিয়াকে নির্যাতন ও অপহরণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় হাতিবান্ধা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বজনেরা। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও মূল আসামি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানবন্ধন করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও হাতিবান্ধা থানার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী সিথির ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাসুদ আল ইসলাম এবং সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। 

 

এ সময় মাসুদ আল ইসলাম বলেন, গত ২ জানুয়ারি আমার বোনকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। আমরা মামলা করতে গেলে পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেনি। তারা মামলা নিতে গড়িমসি করে। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি তফিউজ্জামান জুয়েলসহ অন্যরা গা-ঢাকা দেন। পরে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার বিষয়টি অবহিত হলে মামলা নথিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন এবং কয়েকবার পুলিশি অভিযান চালান। কিন্তু দুই দিনের একটা গ্যাপ থাকায় আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে এজাহারভুক্ত পাঁচ নাম্বার আসামি (অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত গাড়ির) ড্রাইভারকে গ্রেফতার করা হয় এবং তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। অন্য আসামিরা ঢাকাতেই বিভিন্ন জায়গায় আছে; কিন্তু তাদের ধরার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, অপরাধীরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক সেটা তাদের বড় পরিচর নয়। যারা অপরাধ করে তাদের কোনো দল, ধর্ম, জাত নেই। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই। 

সিথি কিবরিয়ার সহপাঠী মো: গোলাম আজাদ বলেন, সিথি কিবরিয়া আমাদের বিভাগের প্রথম স্থান অর্জনকারী ছাত্রী। তার মতো একজন মেধাবী ছাত্রীর নিরাপত্তা যদি রাষ্ট্র দিতে না পারে তখন আমরা বাধ্য হই রাস্তায় নেমে আসতে। আইন যদি আমাদের সহযোগিতা না করে সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। যত দিন পর্যন্ত না আমরা এর বিচার পাবো তত দিন পর্যন্ত সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ বন্ধ করবে না। 

নাট্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তানভীর হাসান সৈকত বলেন, সিথিকে অপহরণের যে চেষ্টা করা হয়েছে সেটা কিন্তু ধর্ষণের চেষ্টা। এভাবেই ধর্ষণ হয়। আমরা ধর্ষণের প্রতিবাদ করি; কিন্তু ধর্ষণ করার যে প্রক্রিয়া চালানো হয় তার প্রতিবাদ করি না। এই পাপিষ্ঠরা সমাজের নিকৃষ্টতম মানুষ, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সমাজকে জানিয়ে দিতে হবে যে এই সমাজে এদের কোনো ঠাঁই নেই।

এর আগে ৪ জানুয়ারি দুপুরে সিথির ভাই মাসুদ আল ইসলাম তার নিজের টাইমলাইনে দেয়া স্ট্যাটাসে এ ঘটনা রাজনৈতিক বিবেচনায় না এনে মূল দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, মাসুদ নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপ সম্পাদক দাবি করেন। এ ছাড়া তার বাবাও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বলে জানান।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!