ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশে সদ্য অনুষ্ঠিত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘অবশ্যই সঠিক’ ছিল না বলে দাবি করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মতে, সেই নির্বাচন ‘পারফেক্ট’ ছিল না। তাই ইতিবাচক সমাধান পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অংশীজনদের মধ্যে অর্থপূর্ণ সংলাপ প্রয়োজন বলে মনে করেন এই সংস্থাটি। : জাতিসংঘ সদর দফতরে গত শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস একথা বলেন। :
বাংলাদেশী এক সাংবাদিক জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের কাছে প্রশ্ন করেন, গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছে। ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে, বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন চালানো হয়েছে আর বিরোধীরা এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এমন কি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশের নির্বাচনকে স্বাগত জানায়নি। বাংলাদেশ সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৭টি সংগঠনকে অনুমোদন দেয়নি।
তাই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আপনার : পর্যবেক্ষণ কি? আপনি কি সার্বিক বিষয় তদন্ত করতে এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কোনো দূত বা বিশেষ কোনো টিমকে পাঠাচ্ছেন? :
জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে তার মুখপাত্র বলেন, ম্যান্ডেট ছাড়া এ রকম তদন্ত করার অধিকার আমাদের নেই। তবে সবার আগে আমি বলতে চাই, রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্পর্কিত ইস্যুতে জাতিসংঘের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো বাংলাদেশ। দেশটি ভয়াবহ জটিল অবস্থার মধ্যে এত বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার যে উদারতা দেখিয়েছে তার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমরা ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। এ সমস্যা এখনও রয়ে গেছে।
বাংলাদেশের সমস্যা ও জটিল অবস্থার পরেও এটা করা হয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের নির্বাচন ‘পারফেক্ট’ ছিল না। তাই আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ একটি সংলাপের জন্য উৎসাহিত করি, যাতে যতটা সম্ভব বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনে ইতিবাচক শৃঙ্খলা আনা যায়। :
অপর দিকে টিআইবি নির্বাচন পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০ টি আসনে মধ্যে ৪৭টিতেই কোন না কোন অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪২টি আসনের একাধিক কেন্দ্রে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিলো নীরব। ৪১ টি আসনে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগের রাতে সিল মেরে রাখা হয় ৩৩ আসনে।
বুথদখল ও জালভোট পড়ে ৩০ আসনে। পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে বাধা ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয় ২৯ আসনে। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা ও জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা হয় ২৬ আসনের। ভোট শেষ হওয়ার আগেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যায় ২২টি আসনের একাধিক কেন্দ্রে । এ সব অনিয়মের ব্যাপারে বিচারবিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করেছেন টিআইবি।