ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দু’জনই পরিবহন চাঁদাবাজ। একজনের নাম শহিদুল হক প্রমিত অন্যজন হাসান বাবু। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ফতুল্লায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে চাঁদাবাজি করতেন। ফতুল্লার অক্টো অফিস থেকে পাগলা বাজার পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরনো সড়কে ৮৫০টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে প্রতিদিন ৩০ টাকা হারে চাঁদা তুলতেন হাসান বাবু। অন্য দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে থেকে ফতুল্লার তল্লা রেললাইন পর্যন্ত সড়কে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত ৫০০ অটোরিকশায় প্রতিদিন চাঁদা তুলতেন শহীদুল হক প্রমিত। নিজের চাঁদাবাজির কথা দু’জনই স্বীকার করেন। তবে তারা আর চাঁদাবাজি করতে চান না। এ জন্য ফতুল্লা থানায় এসে গত শুক্রবার রাতে (২৫জানুয়ারি) জিডি করছেন শহিদুল হক প্রমিত ও হাসান বাবু।
জিডিতে তারা উল্লেখ করেন, চাঁদাবাজি ছাড়ার পর তাদের হুমকি দিচ্ছে শ্রমিকলীগ নেতা আজিজুল। চাঁদা না তুললে তাদের হত্যা করা হবে এমন অভিযোগ তাদের।
হাসান বাবু বলেন, আমার কয়েকটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক আছে। এ জন্য চাঁদাবাজদের ভয়ে ফতুল্লার অক্টো অফিস থেকে পাগলা পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরনো সড়কে আজিজুলের নেতৃত্বে ৮৫০টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে দৈনিক চাঁদাবাজি করতাম। প্রতিটি ইজিবাইক থেকে দৈনিক ৩০ টাকা লাইন খরচ আর মাসে প্লেট ভাড়া ৩০০ টাকা করে আদায় করেছি। একই সাথে প্রতিটি প্লেট ইজিবাইক চালকদের কাছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছি। কয়েক বছর এ লাইনে চাঁদাবাজি করেছি।
এখন আর চাঁদাবাজি করতে চাই না উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, এ চাঁদাবাজির একটি টাকাও সরকার পায় না। সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষের ঘামের এ টাকা কেড়ে নিতে চাই না। সম্প্রতি আমার বিবেক বাধা দিচ্ছে। এটি অপরাধ। তাই আজিজুলকে বলেছি আমি আর খেটেখাওয়া মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করব না। এতে আজিজুল ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বলছে, শান্তি পাইবা না। মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও।
শহিদুল হক প্রমিত বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে থেকে ফতুল্লার তল্লা রেললাইন পর্যন্ত সড়কে আজিজুলের নেতৃত্বে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত ৫০০ অটোরিকশায় চাঁদাবাজি করতাম। প্রতি রিকশায় দুই হাজার টাকা করে প্লেট বিক্রি করেছি। আর সেই প্লেটের ভাড়া হিসেবে ১২০ টাকা করে মাসে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছি। চাঁদার পুরো টাকা আজিজুল আমার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছে। কয়েক বছর এ চাঁদাবাজি করেছি। এখন বিবেক বাধা দিচ্ছে। ঘাম ঝরানো উপার্জনের টাকা গরিবদের কাছ থেকে আর কেড়ে নেব না। তাই আজিজুলকে বলেছি আমি আর চাঁদাবাজি করব না। এতে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের জানান, আজিজুলকে এর আগে পঞ্চবটি মোড়ে চাঁদাবাজির সময় পুলিশ ধাওয়া করে ধরতে পারেনি। তখন তার চার সহযোগীকে চাঁদাবাজির টাকাসহ আটক করা হয়। পুলিশ সব ইজিবাইক মালিক ও চালকদের বলে দিয়েছে কাউকে চাঁদা না দিতে। দু’জনের জিডির তদন্ত চলছে।