ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করা হলে ভারত থেকে আসামকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার হুমকি দিয়েছেন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ। তিনসুকিয়ায় নাগরিকত্ব বিল বিরোধী সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আসামের আদিবাসীদের অধিকার খর্ব করা হলে তার যথাযথ জবাব দিতে প্রস্তুত তারা। দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে নাগরিকত্ব সংশোধন বিরোধী আন্দোলনকারীরা।
আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেছেন, নাগরিক তালিকা প্রণয়ন করে কোটি কোটি রুপি নষ্ট করেছে সরকার। এখন আর এর কোনো মূল্য নেই।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে রোববার আসামের ছাত্রসংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় সাধারণ মানুষও। তিনসুকিয়ায় প্রায় ৭০টি সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজিত নাগরিকত্ব বিল বিরোধী সমাবেশে অংশ নিয়ে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ বলেন, আসামের সাধারণ মানুষের অধিকার ও আবেগ নিয়ে খেলা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অবিলম্বে বিতর্কিত বিলটি বাতিল করা না হলে ভারত থেকে আলাদা হওয়ার কথা ভাববে আসামের মানুষ।
অখিল গগৈ বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের প্রাপ্য সম্মান দেয় তাহলে আমরা দেশের সাথেই থাকব। কিন্তু যদি আসামের মানুষের অধিকার খর্ব করে বিল পাস করা হয় তবে আমরা ভারত থেকে আলাদা হতে বাধ্য হব।’
সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের তীব্র বিরোধিতা করেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও। তিনি বলেন, কোটি কোটি অর্থ খরচ করে সরকার যে তালিকা প্রণয়ন করেছে তা এখন অর্থহীন। অবৈধ নাগরিক শনাক্তের নামে এনআরসি প্রণয়ন করে মোদি সরকার কিন্তু পাঁচ বছরেও সঠিক তালিকা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিলের পক্ষে অযৌক্তিক সাফাই গাওয়ায় রাজ্যের বিজেপি নেতা ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালেরও সমালোচনা করেন তরুণ গগৈ ।
গগৈ বলেন, ‘তাদের মানসিক সমস্যা না থাকলে এমন উগ্র কথাবার্তা বলতে পারত না। নাগরিক তালিকা প্রণয়ন করে কোনো লাভ হয়নি, শুধু প্রচারণা হয়েছে।’ শুধু আসামেই নয় বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব বিল বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে সেভেন সিস্টার্সের অন্য রাজ্যগুলোও। বিল বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্যেই চলমান সঙ্কট সমাধানে সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন। বৈঠকে সব দলকে আহ্বান জানানো হলেও বিধানসভায় জরুরি অধিবেশনের ডাক না দেয়া পর্যন্ত অন্য কোনো আলোচনায় না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জনতা দল, মণিপুর পিপলস পার্টিসহ বিলের বিপক্ষে থাকা দলগুলো।