DMCA.com Protection Status
title="৭

‘আওয়ামী লীগের অতি বিজয় এসেছে ঘৃণ্য ও কলঙ্কজনক পথে’

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাম জোটের মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী লীগের অতি বিজয় অর্জিত হয়েছে ঘৃণ্য ও কলঙ্কজনক পথে। তারা বলেন, দুর্নীতিগ্রস্থ এ নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সোমবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের ‘নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন : গণশুনানীর অভিজ্ঞতা নাগরিক সমাজের ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। মতবিনিময় সভায় বাম জোটের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র আহ্বায়ক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোমিনুল ইসলাম মোমিন প্রমুখ। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ। বাম জোটের উপস্থিত প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, জোনায়েদ সাকি, জলি তালুকদার ও শম্পা বসু।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ফলশ্রুতিতে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। পৃথিবীর দুইশোটি দেশের মধ্যে পঞ্চাশটি দেশে গণতন্ত্র আছে। বাকিগুলোতে স্বৈরতন্ত্র চলছে। বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মিছিলে ঢুকে গেছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি অবস্থায় নিহত হন। কেউ বলতে পারবে না কোন নির্বাচনে তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ভয় এবং লোভ ব্যবহার করে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গদের দুর্নীতিগ্রস্থ করেছে। তিনি এ ধরণের দুর্নীতিগ্রস্থ নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুর জন্য সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, আওয়ামী লীগের অতি বিজয় অর্জিত হয়েছে ঘৃণ্য ও কলঙ্কজনক পন্থায়। বাংলাদেশ অন্ধকার পথে প্রবেশ করেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে আমাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। অধ্যাপক আকাশ বাম জোটকে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশী তাকে দেব’ আন্দোলন গড়ে তুলতে আহ্বান জানান।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে পূর্ব পরিকল্পিত পদ্ধতিতে নির্বাচনে অতি বিজয় অর্জন করেছে। ব্যাংক মালিক আর পোশাক কারখানা মালিকদের সমিতির প্রত্যক্ষ মদদে, আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের সহযোগিতায় জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগের এ বিজয়

তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির নির্বাচনে বিজয়ী সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে শেয়ারবাজার লুটেরাকে বেসরকারি খাত উপদেষ্টা করেছে। বিদেশিদের সাথে মিলে জ্বালানি খাতে লুটপাটকারীকে করা হয়েছে জ্বালানি উপদেষ্টা। এ দিয়েই বোঝা যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম কেমন হবে।

তিনি বাম জোটের নেতা-কর্মীদের ভোট ডাকাত সরকার এবং তাদের জাতীয় সম্পদ লুটপাটের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ইতিহাসের অধ্যাপক আহমদ কামাল পাকিস্তান-বাংলাদেশ আমলের নির্বাচনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতিগ্রস্থ নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাম জোটকে এ দায়িত্ব নিতে হবে।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সহিংসতা অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। কিন্তু সহিংসতা চলেছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই। এ হচ্ছে প্রলম্বিত সহিংসতা। ভয় ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে নির্বাচিত হওয়ার ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা করেছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার দাবি করে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুর পক্ষে মত প্রকাশ করেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!